বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (BMCCI)-এর ২৩তম বার্ষিক সাধারণ সভা (AGM) শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখে ঢাকার একটি স্থানীয় হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার এবং BMCCI-এর প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিজ এক্সেলেন্সি মোহদ শুহাদা ওসমান।
BMCCI-এর সভাপতি জনাব শাব্বির আহমেদ খান ২০২৪ সালের কার্যক্রমের প্রতিবেদন একটি চিত্র উপস্থাপনার মাধ্যমে সদস্যদের সামনে তুলে ধরেন। তিনি BMCCI-এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা তুলে ধরে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধির অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।
বিশ্বব্যাপী এবং দেশের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও বোর্ড ব্যবসায়িক উন্নয়ন এবং চেম্বারের গতিশীলতা বজায় রাখতে অসাধারণ অগ্রগতি অর্জন করেছে। উল্লেখযোগ্য সাফল্যের মধ্যে ছিল মালয়েশিয়ায় একটি তথ্য-সংগ্রহ মিশন, যেখানে বোর্ড গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার যেমন MDEC এবং MATRADE-এর সঙ্গে সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছে। এছাড়াও বোর্ড SEMICON SEA সামিটে অংশগ্রহণ করে, যা সেমিকন্ডাক্টর এবং ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট খাতে একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রযাত্রার সূচনা করে। এতে ট্যালেন্ট ডেভেলপমেন্টের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক (MoU) স্বাক্ষরের পরিকল্পনাও অন্তর্ভুক্ত ছিল। এসব অর্জন BMCCI সদস্যদের ব্যবসায়িক সম্প্রসারণ এবং সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রতি দায়বদ্ধতাকে প্রতিফলিত করে।
সভাপতি আরও উল্লেখ করেন যে, BMCCI জার্নালের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা, নিয়মিত কার্যক্রম যেমন ইফতার মাহফিল এবং মেম্বারস ডে আয়োজন, এবং সদস্যদের সুবিধার্থে বিভিন্ন সেবা সংস্থার সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের কাজ চলমান রয়েছে। এছাড়াও, একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (FTA) স্বাক্ষর প্রক্রিয়া দ্রুততর করা এবং আসিয়ান বাজারে বাংলাদেশকে আরও প্রচারিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যা বাণিজ্য সম্প্রসারণের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ।
সভাপতির বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে জনাব শাব্বির আহমেদ খান সদস্যদের কাছ থেকে পরামর্শ এবং দিকনির্দেশনার আহ্বান জানান, যাতে বোর্ড আগামী বছরে তাদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারে।
মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার হিজ এক্সেলেন্সি মোহদ শুহাদা ওসমান তার বক্তব্যে ২০২৪ সালের ৪ অক্টোবর মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক বাংলাদেশ সফরের কথা উল্লেখ করেন। ওই সফরে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধি করার প্রতি গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেন। সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত হাইকমিশনার হিসেবে তিনি এই দায়িত্ব পালনের চ্যালেঞ্জ এবং গর্ব উভয়ই স্বীকার করেন। তিনি BMCCI-কে তার মিশন বাস্তবায়নের প্রতিটি পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী হিসেবে পাশে থাকার প্রতি আস্থা প্রকাশ করেন।
তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, মালয়েশিয়ার আরও বেশি ব্যবসায়িক সংস্থাকে BMCCI-তে যোগ দিতে তিনি আগ্রহী, যাতে পারস্পরিক সহযোগিতা এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হয়। পাশাপাশি, তিনি চেম্বারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন এবং বাংলাদেশে মালয়েশিয়া হাইকমিশনের পূর্ণ সহযোগিতার নিশ্চয়তা দেন।
তার বক্তব্যের শেষে তিনি ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন এবং একটি উন্নত ব্যবসায়িক পরিবেশ তৈরির জন্য সব স্টেকহোল্ডারকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান।
BMCCI-এর সাবেক সভাপতি এবং সম্মানিত সদস্যরা AGM-এ উপস্থিত ছিলেন। তারা BMCCI বোর্ডকে এমন একটি সুপরিকল্পিত এবং সফল বার্ষিক সাধারণ সভা আয়োজনের জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। উপস্থিতরা পুরো অনুষ্ঠানের সুবিন্যস্ত পরিকল্পনা এবং বাস্তবায়ন দেখে ভূয়সী প্রশংসা করেন।