একটা বার ভেবে বলেন! বাসায় যেদিন বুয়া আসে না, গিন্নীর মেজাজ তখন কেমন থাকে? কিছু বলতে গেলেই ছ্যাৎ করে উঠে না! ৪৪০ ভোল্টের মত যেন। আসলে ঢাকা শহরে বা এখন অন্যান্য বিভাগীয় শহরগুলোতে ‘বুয়া কিন্তু হাতের মোয়া ‘ না। অথবা ধরুন, ব্যাচেলর বাসা। খালা নাই, তো খাওনের পালাও যেন নাই। বুয়া বা খালা হয়তো আদুরে ডাক, হয়তো চলতি ডাক, বা ডাকতে হয় বলে ডাক।
আদতে এটা একটা সার্ভিস ( হ্যাঁ, বুয়ারা ফ্রিতে স্পাই সার্ভিসও দেন বটে)। তবে বুয়া বা খালারা যে কত বড় আসান সে কংক্রিটের শহরের মানুষ মাত্রই জানেন।
শুধু কি এটা? সার্ভিসের কি আর রকমফের নেই, বলেন? কলিংবেল নষ্ট, ডাকো টেকনিশিয়ান, পানির কল নড়বড়ে, বোলাও মেশিনম্যান! ফ্রিজে ঠিক মত ঠান্ডা জমছে না, তাতেও ডাক পড়ে কারো না কারো। ঐ যে আমির খান বললো না, ‘স্যার, হাম মেশিনোসে ঘেরা হুয়া হ্যায়, পেন কি নিভ সে লেকে প্যান্ট কি জিপ থাক, মেশিনই মেশিন হ্যায় ‘। মেশিন যেমন সত্য, আমাদের জীবনে টেকনিশিয়ান আরো বড় সত্য।
সার্ভ উইথ লাভ! এই আপ্তবাক্যে এগোচ্ছে সেবা এক্সওয়াইজেড। দুই বন্ধুর ক্যারাভ্যান।বলে রাখা ভালো, এসব কাজগুলো আজ সেবার মর্যাদা পাচ্ছে, তাতে এই প্ল্যাটফর্মটার গুরুত্ব বোধহয় সবচেয়ে বেশী। এর বাইরে হাজার কোটি টাকার সেবা মার্কেটপ্লেসটা হলো আই-ওপেনার! সেবাটা যেখানে মুখ্য, সার্ভিসচার্জ সেখানে মোক্ষ লাভের হাতিয়ার যেন।
মোটেও কিন্তু এলাম, দেখলাম, জয় করলাম টাইপের কিছু না। ইমতিয়াজ আর সজীব ; এ দুজন সাত সমুদ্র, তেরো নদী পার না হলেও ১৩ বছর কিন্তু চাকরিই করেছেন। সার্ভিস জগতের জুতা সেলাই থেকে চণ্ডীপাঠ বগলদাবা করে তারপর নিজেরা মাঠে নেমেছেন। শুরুতে আবার ম্যানুয়ালী ছিলো বিষয়টা। এখন ফুলি অটোমেটেড বা অনলাইন নির্ভর।
এক ঢাকা শহরে যদি ২ কোটি মানুষ থাকে, তাহলে চোখ বন্ধ করে বলা যায় দুই লাখ টেকনিশিয়ান ও আছে কিন্তু। আর ঢাকা শহরে বা আজকালকার যে কোন শহরে পাশের বাসায় আসা নতুন ভাড়াটিয়া চিনতেই বছর পার। এটাই বোধহয় সেবার প্লাস পয়েন্ট। এ শহরে মানুষ বড় ব্যস্ত, টেকনিশিয়ান চেনার উপায় কই, সেবাদাতা আর সেবাগ্রহীতার কমিউনিকেশন গ্যাপ যে বিশাল! ঢাকা বলে নয়, সব শহরেই অভিন্ন চিত্র।
যত বড় সমস্যা, তত বড় সম্ভাবনা। সেবার পরিধি দেখলেই বুঝা যায় সেটা। কত বছর হলো? মোটে ছয় ; আর তাতেই বড়সড় ছয় পিটিয়ে দিয়েছে সেবা এক্সওয়াইজেড। দেশে অন্যান্য স্টার্টআপগুলো নিয়ে হয়তো চর্চা বেশী, সেবা হয়তো লাইমলাইটের বাইরে থাকে অনেকটা। কিন্তু মহাজনের গরু নয় মোটেও, গোয়ালে তো আছেই, হিসাবেও রাখতে হয় একে।
আসলে সেবা এক্সওয়াইজেডের ব্যবসায়িক দিকের চেয়েও এর এন্ট্রিপ্রেনারিয়াল বিষয়টাই বেশী সুন্দর। ১৩ বছর শিখে তারপর নিজেরা কিকে আসা! আর আজকাল। কার্ড ছাপিয়ে আর সোশ্যাল মিডিয়া পেজ খুলেই সিইও সবাই। ফলাফল? দুইদিন পরেই ব্যাক টু দ্য প্যাভিলিয়ন।
দুই বন্ধু যেমন মনে করেন, দেশের সেবা খাত আগামী পাঁচবছরে প্রসারিত হবে বহুগুণ। একজন উদ্যোক্তার সবচেয়ে বেশী থাকা দরকার, সমস্যা খুঁজে পাওয়ার মাইন্ডসেট। কারণ, উদ্যোক্তারা মোটেও ব্যবসায়ী নন, তারা আসলে সমাধানদাতা।
আর সমাধান এবং সেবা যখন একত্রিত হয়, সেটা তখন দেশের অন্যতম সেরা গ্রোথ সমৃদ্ধ ভেঞ্চারে পরিণত হয়। সেবা এক্সওয়াইজেড তাই কেবলই একটা নাম নয়, কেবলই সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান নয়, এটা একটা দৃষ্টান্ত ও বটে।
ভালো করে লক্ষ্য করলেই দেখা যাবে, দেশে টেকনিশিয়ানদের কোন এক্সেক্ট সংখ্যা বা নিউমেরাল আছে বলে মনে হয় না। সেবা এক্সওয়াইজেডের কল্যাণে কিন্তু দেশের এই টেকনিশিয়ানরাও একটা প্লাটফর্মে চলে আসছেন। তাদের প্রকৃত সংখ্যাও আঁচ করা যাচ্ছে। অর্থনীতির গুপ্ত একটা খাতও দৃশ্যমান হচ্ছে।
সার্ভিসে নজরদারী আনতে বিভিন্ন ট্রেনিংও করায় সেবা।বিহেভিয়ার, প্রবলেম সলভিং আরো বিবিধ বিষয় আছে কিন্তু। এদিকেও অনন্য সেবা এক্সওয়াইজেড।
ছয় বছর পেরোনো সেবা তার যাত্রা ভালোবাসার সাথেই চালিয়ে যাক। সার্ভ উইথ লাভ আপ্তবাক্য আরো দৃঢ় হোক।