সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে জারি করা পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে রায় দিয়েছে হাইকোর্ট।
কোটা সংস্কারে একদল শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পর পাঁচ বছর আগে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ওই পরিপত্র জারি করেছিল। আদালতের রায়ে তা বাতিল হওয়ায় মুক্তিযোদ্ধা কোটা এখন আগের মতো পুনর্বহাল হলো।
তার আগে সরকারি চাকরিতে নিয়োগে ৫৬ শতাংশ পদ বিভিন্ন কোটার জন্য সংরক্ষিত ছিল; এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ৩০ শতাংশ, নারী ১০ শতাংশ, জেলা ১০ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ৫ শতাংশ, প্রতিবন্ধী ১ শতাংশ।
কোটা থাকায় মেধাবীরা বঞ্চিত হচ্ছে- এই দাবি তুলে কোটাবিরোধী আন্দোলন শুরুর পর ২০১৮ সালের এপ্রিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে সব কোটা তুলে দেওয়ার ঘোষণা দেন।
এরপর মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করা হয় কোটা পদ্ধতি পর্যালোচনা করে প্রতিবেদন দিতে। এরপর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কোটা সংস্কার করে প্রজ্ঞাপন দিয়েছিল।
২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করার বিষয়ে পরিপত্রে বলা হয়, নবম গ্রেড (পূর্বতন প্রথম শ্রেণি) এবং দশম থেকে ত্রয়োদশ গ্রেডের (পূর্বতন দ্বিতীয় শ্রেণি) পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হবে।
আর নবম গ্রেড (পূর্বতন প্রথম শ্রেণি) এবং দশম থেকে ত্রয়োদশ গ্রেডের (পূর্বতন দ্বিতীয় শ্রেণি) পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি বাতিল করা হলো।
মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষেত্রে ৩০ শতাংশ কোটা নবম গ্রেড (পূর্বতন প্রথম শ্রেণী) ও দশম গ্রেড থেকে ত্রয়োদশ গ্রেড (পূর্বতন দ্বিতীয় শ্রেণি) বাতিল করে (তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণি) ১৪ থেকে ২০তম গ্রেডে রাখা হয়।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সেই পরিপত্র চ্যালেঞ্জ করে ২০২০ সালে রিট আবেদন করেন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্ম কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সভাপতি অহিদুল ইসলাম তুষারসহ সাতজন শিক্ষার্থী।
সেই আবেদনের শুনানি নিয়ে ২০২১ সালে রুল জারি করে হাই কোর্ট। মন্ত্রিপরিষদ সচিব, মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের সচিব, জনপ্রশাসন সচিব, পাবলিক সার্ভিস (পিএসসির) চেয়ারম্যানসহ ৬ জনকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
দীর্ঘ শুনানি শেষে বুধবার রুলটি যথাযথ ঘোষণা করে রায় দেয় বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. মুনসুরুল হক চৌধুরী। সঙ্গে ছিলেন শফিকুল ইসলাম রিপন।