বিরোধী দলগুলোর বিক্ষোভ ও বিরোধী নেতা–কর্মীদের গ্রেপ্তারের মধ্যেই শনিবার শপথ নিয়েছেন পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের নবনির্বাচিত আইনপ্রণেতারা (এমপিএ)।
৮ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচনের পর এ নিয়ে দেশটির দুই প্রদেশের নবনির্বাচিত আইনপ্রণেতারা শপথ নিলেন। এর আগে শুক্রবার পাঞ্জাব প্রদেশের অন্তত ৩১৩ এমপি এ শপথ নেন।
পাকিস্তান নির্বাচন কমিশন ঘোষিত ফল অনুযায়ী সিন্ধু প্রাদেশিক পরিষদে সর্বোচ্চ ৮৪টি আসন পেয়েছে বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির নেতৃত্বাধীন দল পিপিপি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৮টি আসনে জয়ী হয়েছেন এমকিউএম–পি। এ ছাড়া পিটিআই সমর্থিতসহ ১৪ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। গ্র্যান্ড ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (জিডিএ) ও জামাত–ই–ইসলামি (জেআই) দুটি করে আসন পেয়েছে।
সিন্ধুর মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে সৈয়দ মুরাদ আলি শাহকে মনোনয়ন দিয়েছে পিপিপি। এর আগেও তিনি সিন্ধুর মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। এদিকে শনিবার এমকিউএম-পি জানিয়েছে, সিন্ধু প্রদেশের স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার পদের জন্য প্রার্থী দেবে তারা।
শনিবার সিন্ধুর রাজধানী করাচির বিভিন্ন স্থানে বিরোধী দলগুলোর বিক্ষোভ চলাকালে শপথ নেন নবনির্বাচিত আইন প্রণেতারা। নির্বাচনে কারচুপি ও ফল জালিয়াতির অভিযোগ তুলে পিটিআই, জিডিএ ও জমিয়ত ওলেমা–ই–ইসলামসহ (জেইউআই–এফ) অন্যান্য দল এসব বিক্ষোভের আয়োজন করে।
প্রাদেশিক পরিষদের নবনির্বাচিত আইনপ্রণেতাদের শপথকে কেন্দ্র করে করাচিতে ১৪৪ ধারা জারি করে প্রদেশটির তত্ত্বাবধায়ক সরকার।
কারাবন্দী সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পিটিআই, জিডিএ, জেইউআই–এফ, জেআইসহ আরও কয়েকটি দল নির্বাচনে জালিয়াতির প্রতিবাদে গতকালের শপথ অনুষ্ঠান বর্জন করে।
বিক্ষোভ–গ্রেপ্তার
জেইউআই–এফ শনিবার এক বিবৃতিতে জানায়, বিক্ষোভে অংশ নিতে বিভিন্ন স্থানে থেকে করাচি আসার সময় দলটির অনেক নেতা–কর্মীকে আটক করা হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের ওপর চড়াও হয়েছে পুলিশ। বিক্ষোভে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ার পাশাপাশি বিরোধী নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের লাঠিপেটা করে পুলিশ।
জেইউআই-এফের সিন্ধু প্রাদেশের মহাসচিব রশিদ মাহমুদ বলেন, বিক্ষোভের অধিকার সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃত। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এতে বাধা দিচ্ছে। অনেককে আটক করছে।
জিডিএর মুখপাত্র সর্দার আবদুল রহিম জানান, জিডিএ, জেইউআই–এফ, পিটিআই ও জেআইয়ের বেশ কিছু নেতা–কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিক্ষোভ দমনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে এভাবে ব্যবহার করায় প্রদেশটির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সমালোচনা করেন তিনি।
বিরোধী দলগুলোর বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে করাচির বিভিন্ন সড়কে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। বিশেষ করে সিন্ধু প্রাদেশিক পরিষদ ভবন অভিমুখী সড়কগুলোতে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।
জেইউআই-এফের রশিদ মাহমুদ বলেন, ‘জনগণ আমাদের নির্বাচিত করলেও জালিয়াতি করে তা ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। এ কারণে আমরা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে নেমেছি।’
যদিও পিপিপির চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি বলেছেন, ‘পরিষদে বা এর বাইরে যারাই বিরোধী দলে থাকুক না কেন সবার সঙ্গে সম্পর্ক রেখে ও কথা বলে কাজ করতে হবে। আমরা ঘৃণা ও বিভাজনের রাজনীতির ইতি টানতে চাই।’