অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি নিয়ে দেওয়া তথ্য প্রত্যাহারের পাশাপাশি তাকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
রবিবার রেজিস্ট্রি ডাকযোগে ইভ্যালির সাবেক চেয়ারম্যান সামিমা নাসরিন ও প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ রাসেলের পক্ষে নোটিশটি পাঠান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আহসান হাবিব। নোটিশে বিচারপতি মানিক নিরপেক্ষ নন দাবি করে তাকে দিয়ে প্রতিষ্ঠানটি সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হবে না বলেও শঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।
নোটিশে বলা হয়েছে, ‘মহামান্য হাইকোর্ট যে আস্থা নিয়ে, ইভ্যালি বিষয়ক আপনার উপর পবিত্র দায়িত্ব অর্পণ করেছিলেন আপনি স্পষ্টতই সেই আস্থা ও বিশ্বাসের স্থানকে অবমূল্যায়ন করে আপনার ওপর নির্দেশিত চৌহদ্দী ছাড়িয়ে এখতিয়ার বহির্ভূত অসত্য, মনগড়া, ভিত্তিহীন, বিভ্রান্তিকর ও মানহানিকর বক্তব্য প্রদান করে চলেছেন। আপনি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালতের একজন সাবেক বিচারপতি হিসেবে আপনার উপর জনমানুষের প্রত্যাশাও ব্যাপক বলে মনে করা হয়। আপনার এই ধরনের অসত্য, মনগড়া, ভিত্তিহীন, বিভ্রান্তিকর ও মানহানিকর বক্তব্য জনমনে ব্যাপক ক্ষোভের সঞ্চার করেছে এবং সারা দেশব্যাপী আপনার বিরুদ্ধে দেশের আপামর জনতা আপনার বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছে এবং করছে।’
নোটিশে আরও বলা হয়েছে, ‘আইনি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আমি আমার মোয়াক্কেলদের মাধ্যমে নির্দেশিত হয়ে আপনাকে অনুরোধ করছি যে আপনি ইভ্যালি, ইভ্যালির চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহীদের নিয়ে যে অসত্য, ভিত্তিহীন, মনগড়া, বিভ্রান্তিকর ও মানহানিকর বক্তব্য দিয়েছেন আগামী ৭ দিনের ভেতর নিঃশর্তভাবে প্রকাশ্যে লিখিতভাবে প্রত্যাহার করে নেবেন। এসব মন্তব্যের জন্য একইভাবে প্রকাশ্যে লিখিতভাবে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করবেন। অন্যথায় আপনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের আইনে দেওয়ানি ও ফৌজদারি উভয়ভাবেই যথোপযুক্ত আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
আদালত কর্তৃক গঠিত ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা কমিটির প্রধান আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক গত ২৬ অক্টোবর বলেছিলেন, বিতর্কিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ রাসেল হাজার কোটি টাকা দুবাইয়ে পাচার করেছেন। এর সঙ্গে জড়িত ছিলেন তাঁর স্ত্রী তথা প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন ও শ্যালিকা সাবরিনা নাসরিন।
তিনি বলেছিলেন, ‘এখানে দুটি সিন্দুক ও কয়েকটি আলমারির সন্ধান পেয়েছি। তালাবদ্ধ এই সিন্ধুকগুলোতে অনেক মূল্যবান সম্পদ রয়েছে বলে আমাদের কাছে মনে হয়েছে।’
ইভ্যালির বিপুল সম্পদ রয়েছে উল্লেখ করে শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেছিলেন, ‘এখানে জনগণ হাজার হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ করেছে। প্রতারিত হয়েছে হাজার হাজার মানুষ। তাদের টাকা ফিরিয়ে দেওয়া আমাদের আইনি দায়িত্ব। আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করব জনগণের স্বার্থ রক্ষা করতে।’
বিচারপতি মানিক বলেছিলেন, ‘আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে, ইভ্যালির প্রত্যেক কর্মীর কাছে একটি করে ল্যাপটপ ছিল; তারা এসব ল্যাপটপ নিয়ে চলে গেছে। সেগুলো উদ্ধার করা হবে। কারণ এগুলো ইভ্যালির সম্পদ। এর বাইরে অনেক সম্পদ আছে; সেসব সম্পদ উদ্ধার করব। চেকের একটি লিস্ট পেয়েছি। এগুলো যাদের কাছে আছে, তাদের ডাকব। যদি না আসে, প্রয়োজনে যেভাবে আসে, সেভাবে নিয়ে আসার উদ্যোগ নেওয়া হবে।’