অন্যান্যবারের চেয়ে এবার ভারতের সাধারণ নির্বাচন নিয়ে কাশ্মীরে বিশেষ আগ্রহ রয়েছে। এ নির্বাচনে কাশ্মীরিদের কাছে প্রধান ইস্যু ৩৭০ ধারার বিলুপ্তি। নির্বাচনকালীন কাশ্মীরের রাজনীতি নিয়ে লিখেছেন শুভজিৎ বাগচী।
উত্তর কাশ্মীরের বারামুল্লা নির্বাচনী কেন্দ্রের ভোটার খাজা রিয়াজ একজন পূর্ণাঙ্গ কাশ্মীরি। পূর্ণাঙ্গ কারণ, কাশ্মীরের বড়সংখ্যক মানুষের মতো একাধারে তিনি কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসন সমর্থন করেন। আবার অন্যদিকে ভারতের সঙ্গে থাকারও বিরোধী নন।
কাশ্মীরের বড় একটা অংশের মানুষ মনে করেন, এটাই কাশ্মীরের জন্য উপযুক্ত রাস্তা। তাঁরা স্বাধীন কাশ্মীর চান না। কারণ, তাতে বিপদ আরও অনেক বড় হতে পারে বলে তাঁরা মনে করেন। আবার কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার করা হোক, তা-ও চান না। রিয়াজ এই গোত্রের মানুষ, মধ্যপন্থায় বিশ্বাসী। সেই রিয়াজ টেলিফোনে বললেন, ‘এবারের নির্বাচন নিয়ে তাপ-উত্তাপ বিশেষ নেই।’
রিয়াজের পর্যবেক্ষণ খতিয়ে দেখে বোঝা গেল অভিজ্ঞ এই কৃষক হয় মনের কথা বলেননি, অথবা তিনি মাঠপর্যায়ের পরিস্থিতি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নন। এটা ঠিকই, অন্যান্যবার ভারতের সাধারণ নির্বাচন বা কাশ্মীরের বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে বিশেষ আগ্রহ কাশ্মীরে থাকে না। নির্বাচনকে ভারতের রুটিন প্রশাসনিক তৎপরতা বলে মনে করা হয়। কিন্তু কাশ্মীর উপত্যকার নাগরিক সমাজের একাংশ এবং সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলে বোঝা গেল, এবারের চিত্র সেটা নয়। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে ফলাফল নিয়ে কাশ্মীরে এবার প্রবল আগ্রহ রয়েছে।
নির্বাচন নিয়ে কেন আগ্রহ কাশ্মীরে
কাশ্মীরের প্রধান দুই বিরোধী দল, দুই সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ফারুক ও ওমর আবদুল্লাহর জম্মু-কাশ্মীর ন্যাশনাল কনফারেন্স (এনসি) এবং আরেক সাবেক মুখ্যমন্ত্রীর দল পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টি (পিডিপি) একটি মাত্র স্লোগানে পৃথকভাবে এই নির্বাচনে লড়ছে। কী সেই স্লোগান?
‘তাঁরা ও তাঁদের দল এনসি ও পিডিপি ধারাবাহিকভাবে বলে চলেছে, এই নির্বাচন শুধু সংসদ সদস্য নির্বাচনের ভোট নয়, এই নির্বাচন ২০১৯-এর ৫ আগস্ট যে কাজ বিজেপি করেছিল, সেই কাজের জবাব দেওয়ার ভোট। অন্যান্যবারে সার্বিকভাবে ভোট বয়কটের যে ডাক দেওয়া হয়, তা এবারে হয়নি। এবারে বলা হচ্ছে, ভোট না দেওয়ার পরিবর্তে ভোট দিয়েই প্রতিবাদ করতে হবে। এটা তাই খুবই অন্য রকমের নির্বাচন’—এ কথা বলেন নাইমা মাহজুর।
কাশ্মীরের সাংবাদিক নাইমা দীর্ঘদিন বিবিসির উর্দু বিভাগের সম্পাদকীয় বিভাগে কাজ করেছেন। বর্তমানে তিনি একজন পুরো সময়ের লেখিকা। নাইমার কথামতো, কাশ্মীরের ভোটারের কাছে এবারে পছন্দ-অপছন্দের বিষয়টি আর অন্যান্যবারের মতো ধোঁয়াশা-আচ্ছন্ন নয়।
ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা, যা ৭০ বছর ধরে কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদা ও কিছু অতিরিক্ত সুবিধা পাইয়ে দিয়েছে, তা তুলে নেওয়া হয় ২০১৯ সালে।
কাশ্মীরের মানুষ এর প্রতিবাদ করার কোনো সুযোগ অন্যান্যবারের মতো পাননি। কারণ, নানান স্তরে নিরাপত্তার বলয় তাঁদের ঘিরে রেখেছিল।
এর পরের বছরগুলোয়ও বড় ধরনের প্রতিবাদ নাগরিক সমাজ থেকে উঠে আসেনি, যেমনটা অতীতে উঠে আসত কাশ্মীরে। কিন্তু ক্ষোভটা ছিল। আর তাই, যখন দুই প্রধান দল এনসি এবং পিডিপি ঘোষণা দেয় যে এবারের নির্বাচন বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের নির্বাচন, তখন আবার নতুন করে নড়েচড়ে বসেন কাশ্মীরের মানুষ, ভোটাররা। এটাই সার্বিকভাবে কাশ্মীর উপত্যকার মানুষের বক্তব্য।
কেন কাশ্মীরে প্রার্থী দিল না বিজেপি
জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখ মিলিয়ে মোট ছয়টি লোকসভা আসন রয়েছে। কাশ্মীর উপত্যকায় তিনটি—বারামুল্লা, শ্রীনগর ও অনন্তনাগ-রাজৌরি; জম্মুতে দুটি—উধমপুর ও জম্মু এবং লাদাখে একটি।
উপত্যকায় যে তিনটি আসনে নির্বাচন হচ্ছে, তা হচ্ছে পুরোপুরি ৩৭০ ধারা সরিয়ে দেওয়ার পক্ষে-বিপক্ষে। যেহেতু উপত্যকায় বিরাটভাবে মুসলমান সম্প্রদায় সংখ্যাগরিষ্ঠ, তাই বুঝতে অসুবিধা হয় না যে এই তিন আসনেই বিজেপিবিরোধীরা জয়ী হবে।
নাইমা বলেন, ‘বস্তুত সেটা বুঝতে পেরেই ৩৭০ ধারা তুলে দেওয়ার মতো বড় সাফল্য সত্ত্বেও বিজেপি কাশ্মীর উপত্যকার তিন আসনে প্রার্থী দেয়নি। তাদের কাছে খবর ছিল যে তারা তিন আসনেই হারবে।’ ২০১৯ সালেও এই তিন আসন পেয়েছিল এনসি এবং এবারও সেই সম্ভাবনা রয়েছে বলে তিনি মনে করেন।
৩৭০ ধারার স্লোগান দিয়ে এনসি-পিডিপি উপত্যকায় নির্বাচনকে প্রায় পুরোপুরি মেরুকরণ করে ফেলেছে। এটা কিছুটা প্রত্যাশিতই ছিল, কারণ এনসি-পিডিপির প্রধান শক্তির জায়গা কাশ্মীর উপত্যকা।
অন্যদিকে এই মেরুকরণ বিজেপিকে উপত্যকায় সাহায্য না করলেও সমতলের জম্মু আসনে এবং উত্তর ভারতের অন্য রাজ্যে সাহায্য করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, সেখানে হিন্দু ভোটার বেশি। এটা বুঝেই এই মেরুকরণের সুবিধা তোলার চেষ্টা করছে বিজেপি। গত ১৬ এপ্রিল জম্মুর জনসভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এনসি, পিডিপি এবং কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ‘সন্ত্রাসবাদে মদদ দেওয়ার’ অভিযোগ এনেছেন। কাশ্মীরে প্রার্থী না দেওয়ার একটা কৈফিয়তও তিনি দেন।
অমিত শাহ বলেন, ‘উপত্যকায় কমল (বিজেপির প্রতীক) ফোটানোর জন্য তাড়াহুড়ো করে বিজেপি কিছু করতে চায় না। আমাদের বিরোধীরা যেমন অভিযোগ করেছেন যে আমরা কাশ্মীর দখল করতে এসেছি, তা ভিত্তিহীন। আমরা প্রতিটি কাশ্মীরির হৃদয় জয় করতে চাই।’
এনসি-পিডিপি-কংগ্রেসবিরোধী শক্তির উত্থান
২০১৯ সালে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা অবলুপ্তির পর ধীরে ধীরে একটা এনসি-পিডিপি-কংগ্রেসবিরোধী শক্তির উত্থান হয়েছে জম্মু-কাশ্মীরে। কাশ্মীরের সাধারণ মানুষ মনে করেন, এই নতুন শক্তির পেছনে রয়েছে বিজেপি।
বিজেপির নেতারা যতই কাশ্মীরে এসে ভারতের জাতীয় পতাকা তুলুন না কেন, তাঁরা সরাসরি সামনে থেকে এই শক্তির নেতৃত্ব দিলে হিতে বিপরীত হতে পারে। তাই তাঁরা পেছন থেকে এই জোট গঠন করতে সাহায্য করছেন বলে মনে করেন সাধারণ মানুষ।
প্রধানত তিনটি দল রয়েছে এই জোটে, যাদের নাম অমিত শাহ সন্ত্রাসবাদী দলের তালিকায় রাখেননি। এর থেকেই মনে করা হচ্ছে, এই দলগুলোর সঙ্গে বিজেপির সম্পর্ক ভালো।
এই তিন দলের প্রধান হলো সাবেক বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা সাজ্জাদ লোনের জম্মু-কাশ্মীর পিপলস কনফারেন্স। ২০১৪ সালে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পরই সাজ্জাদ মন্তব্য করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অনেকটা তাঁর বড় ভাইয়ের মতো। সেই সময় থেকে তাঁর দল পিপলস কনফারেন্স (যা ১৯৭৮ সালে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন সাজ্জাদের শহীদ পিতা এবং ধর্মীয় নেতা আবদুল গনি লোন) মোটামুটি নিরবচ্ছিন্নভাবে বিজেপির সঙ্গে সম্পর্ক রেখে চলেছে।
সাজ্জাদ উত্তর কাশ্মীরের বারামুল্লায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ন্যাশনাল কনফারেন্সের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ ও পিডিপির ফৈয়াজ মীরের বিরুদ্ধে।
পিপলস কনফারেন্স ছাড়াও আরও যে দুটি গুরুত্বপূর্ণ দলের বিরুদ্ধে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কোনো মন্তব্য করেননি। সেই দুই দল হলো কংগ্রেসের সাবেক জ্যেষ্ঠ নেতা এবং জম্মু-কাশ্মীরের আরেক সাবেক মুখ্যমন্ত্রী গুলাম নবী আজাদের দল ডেমোক্রেটিক প্রগ্রেসিভ আজাদ পার্টি। রাহুল গান্ধীর বিরোধিতা করে ২০২২ সালে কংগ্রেস ছেড়ে বেরিয়ে আজাদ পার্টি গঠন করেন গুলাম নবী। জম্মু ডিভিশনের উধমপুর আসনে আজাদ তাঁর প্রধান শিষ্য জি এম সারুরিকে (তিনিও একসময় কংগ্রেসে ছিলেন) প্রার্থী করেছেন।
রাজনৈতিক জীবনে প্রথমার্ধে গান্ধীবাদী সারুরি মোটামুটিভাবে জনপ্রিয় একজন নেতা। ফলে মনে করা হচ্ছে, তিনি এই আসনে কংগ্রেসের ভোট কিছুটা কেটে বিজেপির জয় সুনিশ্চিত করতে পারেন। উল্লেখ্য, জম্মুর দুটি এবং লাদাখের একটি আসন ইন্ডিয়া জোটের প্রধান দল কংগ্রেসকে ছেড়ে দিয়েছে এনসি-পিডিপি। যদিও এনসি ও পিডিপির মধ্যে কাশ্মীর উপত্যকায় কোনো সমঝোতা হয়নি এবং তারা পরস্পরের বিরুদ্ধে প্রার্থী দিয়েছে।
অপর যে দল এনসি-পিডিপি-কংগ্রেসের বিরুদ্ধে রয়েছে, সেটি হলো জম্মু-কাশ্মীর আপনি পার্টি। এই পার্টি প্রতিষ্ঠাতা আলতাফ বুখারি ২০১৯ সালে পিডিপি থেকে বহিষ্কৃত হয়ে আপনি পার্টি গঠন করেন। তাৎপর্যপূর্ণ যে আপনি পার্টি এবং নরেন্দ্র মোদির স্নেহধন্য সাবেক বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা সাজ্জাদ লোন একটি আনুষ্ঠানিক প্রাক্-নির্বাচনী জোট গঠন করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কাশ্মীরের এক সাংবাদিক বলেন, ‘এই কারণে বারামুল্লা আসন পিপলস কনফারেন্সকে ছেড়ে দিয়েছে আপনি পার্টি। অন্যদিকে, শ্রীনগর ও অনন্তনাগ আসন পিপলস কনফারেন্স ছেড়ে দিয়েছে আপনি পার্টিকে। এটাকেই কাশ্মীরের অঘোষিত এনসি-পিডিপি-কংগ্রেসবিরোধী জোট বলা যেতে পারে। স্পষ্টই এর পেছনে রয়েছে বিজেপি।’
পিডিপি অভিযোগ করেছে, অনন্তনাগ আসনে সেখানকার বড়সংখ্যক ভোটার, যাঁরা পাহাড়ি সম্প্রদায়ের, বিজেপি তাঁদের হুমকি দিচ্ছে আলতাফ বুখারির আপনি পার্টিতে ভোট দেওয়ার জন্য। অর্থাৎ কিছুটা অনানুষ্ঠানিকভাবে একটা বিজেপি-সমর্থিত জোট গঠিত হয়েছে জম্মু-কাশ্মীরে, যদিও বিজেপি সরাসরি নির্বাচন লড়ছে না।
পিডিপির অবস্থান
পিডিপির অবস্থাটা অদ্ভুত। তারা ন্যাশনাল কনফারেন্স ও কংগ্রেসের মতোই কট্টর বিজেপিবিরোধী। তারাও ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের তীব্র প্রতিবাদ করছে এবং তাদের প্রার্থীরাও ভালোই। যেমন শ্রীনগরে রয়েছেন যুবনেতা ওয়াহিদ পারা এবং অনন্তনাগে দলের প্রধান মেহবুবা মুফতি, যাঁর বাবা ও সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মুফতি মহম্মদ সৈয়দ ১৯৯৯ সালে পিডিপি গঠন করেছিলেন।
একসময় পিডিপির সমর্থক ছিলেন, নাম প্রকাশ অনিচ্ছুক এমন আরেক সাংবাদিক বলেন, ‘২০১৪ সালে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর ৮৭ সদস্যের রাজ্য বিধানসভায় বিজেপির সঙ্গে যুগ্মভাবে সরকার গঠন করেছিল পিডিপি। সে সময় আমি পিডিপির জ্যেষ্ঠ মন্ত্রী নঈম আখতারকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম যে ‘‘এটা আপনারা কী করলেন? আপনারা জেনেশুনে কাশ্মীরে বিজেপিকে নিয়ে এলেন।’’
আখতার সেই সাংবাদিককে বলেছিলেন, ‘আমরা ওদের “বিয়ার হাগ”(ভাল্লুকের কায়দায় জড়িয়ে ধরা) দিলাম এবং তা করে আমাদের রাস্তায় নিয়ে এলাম।’
ওই সাংবাদিক বলেন, ‘২০১৮ সালে বিজেপি পিডিপির ঘাড়ে পা দিয়ে কাশ্মীরে নিজেদের বিস্তার ঘটায়, এরপর মেহবুবাসরকার থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে। ২০১৯-এর আগস্ট মাসে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার করে। ফলে আজ যখন পিডিপি বলে যে বিজেপিকে বিশ্বাস করবে না, তখন মানুষ তাদেরই বিশ্বাস করে না। তাদের প্রার্থী তাই ভালো হলেও আসন পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম।’
কাশ্মীরের অধিকাংশ মানুষেরই বক্তব্য, ন্যাশনাল কনফারেন্সের প্রার্থীরা অপেক্ষাকৃত শক্তিশালী। বারামুল্লায় রয়েছেন ওমর আবদুল্লাহ, শ্রীনগরে আগা রুহুল্লাহ এবং অনন্তনাগে মিয়া আলতাফ আহমেদ। ইংরেজিতে বললে শেষের দুজন খুব ‘ইন্টারেস্টিং’ প্রার্থী।
আগা রুহুল্লাহ একজন ধর্মীয় নেতা এবং সুন্নি-অধ্যুষিত কাশ্মীরে সংখ্যালঘু শিয়া নেতা। কিন্তু মুসলমান সমাজে সার্বিকভাবে তাঁর বিরাট গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। কারণ, আবারও সেই ৩৭০ ধারা বিলোপ। ২০১৯ সালে ধারা বিলোপের পর তিনিই ছিলেন অন্যতম প্রধান নেতা, যিনি অত্যন্ত আক্রমণাত্মক ভাষায় কেন্দ্রীয় সরকারকে আক্রমণ করেছিলেন।
মিয়া আলতাফও একজন ধর্মীয় নেতা। তিনি পাহাড়ি সম্প্রদায়ের মানুষ, যাঁদের বড় ভোট রয়েছে অনন্তনাগে। পাহাড়িরা আলতাফের সঙ্গে রয়েছেন।
লাদাখ প্রসঙ্গ
লাদাখ আসনটিতে সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে কংগ্রেসের সঙ্গে বিজেপির। বিজেপি তাদের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির কারণে এবং লাদাখিদের সার্বিক ক্ষোভ এবং সাম্প্রতিক প্রতিবাদের কারণে আসনটিতে খুব শক্তপোক্ত অবস্থায় নেই। ফলে পিডিপি এবং ন্যাশনাল কনফারেন্স-সমর্থিত কংগ্রেসের এখানে জেতার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু কংগ্রেস এখনো এখানে প্রার্থী দিয়ে উঠতে পারেনি। এর কারণ লাদাখ লোকসভার একদিকে শিয়া-অধ্যুষিত কারগিল এবং অন্যদিকে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী অধ্যুষিত লেহ।
একটি সর্বভারতীয় দৈনিকের জম্মু-কাশ্মীর সংবাদদাতা বলেন, ‘এর মধ্যে কোন দিকে ভোট বেশি, সেটাই এখন কংগ্রেসের চিন্তা। কারণ, শিয়াদের সন্তুষ্ট করতে গেলে বৌদ্ধরা খেপে যাবে এবং বৌদ্ধদের সন্তুষ্ট করতে গেলে শিয়ারা খেপে যাবে। কীভাবে সমতা এনে উপযুক্ত প্রার্থী দেওয়া যায়, তা নিয়ে কংগ্রেসে চিন্তাভাবনা চলছে। আশা করা যায়, তারা এই ভাবনার জন্য আর খুব বেশি সময় নেবে না, নিলে বিপদ বাড়বে।’