ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য ‘ডিজিটাল কমার্স নির্দেশিকা-২০২১’ চূড়ান্ত করা হয়েছে।বুধবার ডিজিটাল বাণিজ্য পরিচালনা সংক্রান্ত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় নির্দেশিকার খসড়ায় ‘কিছু’ সংশোধন এনে তা চূড়ান্তকরণ করা হয়। এটি এখন আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিংয়ের জন্য শিগগির পাঠানো হবে। এরপর আইন মন্ত্রণালয় যদি মনে করে এটি মন্ত্রিসভার অনুমোদনের প্রয়োজন আছে তাহলে সেখানে এটি পাঠানো হবে।বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষের সভাপতিত্বে এই সভায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়,বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর-সংস্থার প্রতিনিধি এবং ই-ক্যাব ও বেসিসের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডব্লিউটিও সেলের মহাপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান বলেন, অনলাইন কেনাকাটায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত ও গ্রাহক প্রতারণা এড়াতে প্রয়োজনীয় নির্দেশিকা নীতিমালায় রাখা হচ্ছে।নির্দেশিকাটি ভেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হচ্ছে বলে জানান তিনি।
ই-ক্যাবের সভাপতি শমী কায়সার বলেন, এসওপি বাস্তবায়ন হলে এই মুহুর্তে অনেক সমস্যার সমাধান হবে। তবে চূড়ান্তভাবে ফল পেতে হলে এটিকে আইনে পরিণত করতে হবে। এছাড়া আমরা চেষ্টা থাকবে প্রতিষ্ঠানগুলো যেন মেনে চলে সেদিকে নজর রাখতে।বেসিস সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর বলেন, খুব অল্প কিছু সংশোধন শেষে এটি চূড়ান্ত করা হয়েছে। এখন আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিং ও প্রয়োজন হলে মন্ত্রিসভার অনুমোদন শেষে এটি কার্যকর হবে ।
ই-ক্যাব সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াহেদ তমাল বলেন, এসওপি চূড়ান্ত হলে ই-কমার্সের ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয় স্বার্থ সুরক্ষিত হবে। ই-ক্যাবের পক্ষ থেকে কয়েকবছর আগে এটি করার প্রস্তাব দিলেও, দীর্ঘ এক বছর ধরে এটি চূড়ান্ত করার জন্য তাগিদ দেয়া হচ্ছে।চূড়ান্তকরণ সভায় সংগঠনটির বেশীরভাগ মত রাখা হয়েছে উল্লেখ করে এটি দ্রুত প্রকাশের আশা করেন তিনি।
ই-ক্যাব পরিচালক আসিফ আহনাফ বলেন, সভায় ই-ক্যাবের পক্ষ থেকে পণ্য ডেলিভারি সময় নির্দিষ্টকরণ, রিফান্ড পলিসি বাংলায় ও ইংরেজিতে উল্লেখ নিশ্চিত করা, ট্রেড লাইসেন্স বিকল্প হিসেবে ব্যক্তি উদ্যোক্তা নিবন্ধন, সরবরাহকারী পাওনা পরিশোধের সময় নির্ধারণ, মার্কেটপ্লেসে পণ্য বিক্রির ক্ষেত্রে যথাযথ নিয়ম-বিধান, মূল্যফেরত নীতি ইত্যাদি বিষয়গুলো নিয়ে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব পেশ করা হয়।এসওপি বাস্তবায়ন হলে এটি ই-কমার্স খাতে শৃঙ্খলা নিশ্চিত করবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।নির্দেশিকায় বিভিন্ন বিষয়ের মধ্যে রয়েছে, সম্পূর্ণ অগ্রিম পণ্যমূল্য নিলে গ্রাহক একই শহরের হলে ৫ দিন এবং ভিন্ন শহরের হলে পরবর্তী ১০ দিনের মধ্যে ডেলিভারি নিশ্চিত করার বিধান রাখা হয়েছে।
অগ্রিম পুরো পরিশোধিত পণ্যমূল্যে ডেলিভারির আগে বিক্রয়কারি টাকা পাবেন না, বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে মূল্য পরিশোধ করতে হবে।এছাড়া অনলাইন পণ্য বিক্রির ক্ষেত্রে কোন বিক্রয়কারি প্রতিষ্ঠানের লটারি করার সুযোগ থাকবে না। সব ধরনের ডিজিটাল ওয়ালেট, গিফট কার্ড, ক্যাশ ভাউচার বা অন্য কোনো মাধ্যম, যা অর্থের বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হবে, সেই সব ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি নিয়ে করতে হবে।এতে মাল্টি লেভেল মার্কেটিং বা নেটওয়ার্ক ব্যবসা পরিচালনা করা যাবে না। ডিজিটাল মাধ্যমে নেশাসামগ্রী, বিস্ফোরক দ্রব্য বা অন্য কোনো নিষিদ্ধ সামগ্রী ক্রয়-বিক্রয় করা যাবে না। ডিজিটাল মাধ্যমে ওষুধ ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের লাইসেন্স গ্রহণ করতে হবে