ইন্টারনেট নির্ভরতা যতো বেশি তৈরি হচ্ছে, ডিজিটাল অপরাধ ততো বেশি বাড়ছে। যা প্রতিরোধে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ অপরিহার্য। ডিজিটাল অপরাধ শনাক্ত ও তা দমন করার জন্য ডিজিটাল প্রযুক্তিই ব্যবহার করতে হবে, প্রচলিত পদ্ধতিতে ডিজিটাল অপরাধ মোকাবেলা করা সম্ভব নয়। এব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সবার সম্মিলিত ভাবে কাজ করার পাশাপাশি- জনগণের মধ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা নিয়ে ব্যাপক সচেতনতা তৈরির বিকল্প নেই।
বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাজধানীতে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি)-এর কম্পিউটার কৌশল বিভাগের উদ্যোগে আইইবি সদর দফতরের কাউন্সিল সম্মেলন কক্ষে “নিরাপদ ইন্টারনেট : চ্যালেঞ্জ ও করণীয়” শীর্ষক সেমিনারে ভার্চুয়ালি যুক্ত থেকে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মোস্তাফা জব্বার বলেন, দেশে এখন ১১ কোটি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন, তাদের মধ্যে খুব সামান্য মানুষ প্রযুক্তির সাথে খাপ খাওয়ানোর দক্ষতা রাখেন।
মাত্র কয়েক বছর আগেও ডিজিটাল নিরাপত্তা বলতে কোন প্রযুক্তি, কিংবা অন্য কোন কৌশল বা সুনির্দিষ্ট আইন ছিল না উল্লেখ করে বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সাইবার হুমকি শণাক্তকরণ ও প্রতিক্রিয়া কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি দেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। এর ফলে ইতোমধ্যে ২২ হাজার পর্ণো এবং ৪ হাজার জুয়ার সাইটসহ আরও সহস্রাধিক আপত্তিকর সাইট বন্ধ করা হয়েছে।
সম্প্রতি বেশ কিছু গেম বন্ধ করার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ফেসবুক ও ইউটিউবসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত ক্ষতিকর কন্টেন্ট পৃথিবীর কোন দেশই বন্ধ করার প্রযুক্তি আবিস্কার করতে পারেনি। তবে আমাদের দৃঢ় প্রচেষ্টায় তাদের সাথে সু-সম্পর্ক তৈরি করার ফলে আমরা আজ কিছুটা সুফল পাচ্ছি। তারা এক সময় মত প্রকাশের স্বাধীনতা কিংবা তাদের কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ডের দোহাই দিয়ে যে বিষয়গুলো এড়িয়ে যেতে চাইতো, এখন সে ক্ষেত্রে কিছুটা হলেও পরিবর্তন এসেছে। তারা এখন ভ্যাট-ট্যাক্স দিচ্ছে। আমাদের যে কোন অভিযোগ গুরুত্বের সাথে দেখছে।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সিটিটিসি’র অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার ইঞ্জিনিয়ার সাইদ নাসিরুল্লাহ। অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন, আইইবি কম্পিউটার কৌশল বিভাগের ভাইস চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার খান মোহাম্মদ কায়ছার।
প্রবন্ধ উপস্থাপক ইন্টারনেট নিরাপত্তা বিষয়ে সচেতনার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ইন্টারনেট ব্যবহারকারিকে অবশ্যই ইন্টারনেট স্বাক্ষরতা অর্জন করতে হবে।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন, আইইবি’র সম্মানী সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মোঃ শাহাদাৎ হোসেন।
অংশগ্রহণকারী অন্যান্যদের মধ্যে ছিলেন, আইইবি কম্পিউটার কৌশল বিভাগের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. তমিজ উদ্দীন আহমেদের সভাপতিত্বে এবং কম্পিউটার কৌশল বিভাগের সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার সঞ্জয় কুমার নাথের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এবং ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি)-এর প্রাক্তন সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুস সবুর, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন ও আইইবি’র ভাইস প্রেসিডেন্ট (এইচআরডি) ইঞ্জিনিয়ার মো. নূরুজ্জামান এবং টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মো: সাহাব উদ্দিন প্রমুখ।