কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরার সাংবাদিক ইসমাইল আলগৌলকে ইসরায়েলি বাহিনী মারধর করে গ্রেপ্তার করেছে বলে দাবি করেছে গণমাধ্যমটি। আজ সোমবার গাজার সবচেয়ে বড় হাসপাতালে অভিযান চালানোর সময় এ ঘটনা ঘটে বলে দাবি করে তারা দ্রুত সহকর্মীর মুক্তি চায়।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ভাষ্য, তারা আল–শিফা হাসপাতালে হামাস জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছিল। তবে প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, সেখানে বিমান হামলা হচ্ছিল এবং হাসপাতালের অদূরে ইসরায়েলি বাহিনীর ট্যাংক দেখা গেছে। সে সময় হাসপাতালে অনেক রোগী ও বাস্তুচ্যুত লোকজনের ভিড় ছিল।
আজ সকালে আল-শিফা হাসপাতালে দখলদার বাহিনীর অভিযানের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে ইসমাইল আলগৌলসহ বেশ কয়েকজন সাংবাদিক গ্রেপ্তার হন। প্রত্যক্ষদর্শীদের তথ্যমতে, ইসমাইলকে ব্যাপক মারধর করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
গ্রেপ্তারের পর চ্যানেলের গাড়ি, ক্যামেরা ও অন্যান্য সরঞ্জাম ধ্বংস করে দেওয়া হয়। তবে এ ঘটনায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি।
তারা সাংবাদিক ইসমাইল এবং তাঁর সঙ্গে যাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাঁদের তাৎক্ষণিক মুক্তি দাবি করে। একই সঙ্গে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাও দখলদার বাহিনীর দায়িত্ব বলে উল্লেখ করে।
আল-জাজিরার একটি সূত্র নাম না প্রকাশের শর্তে কথা বলেন। তিনি জানান, ইসমাইলের সঙ্গে আরও পাঁচজন ক্যামেরা ক্রু ও ইঞ্জিনিয়ার গ্রেপ্তার হয়েছেন।
গত মাসে নেটওয়ার্কটি গাজায় কর্মরত আল–জাজিরার কর্মীদের ইসরায়েল পরিকল্পিতভাবে লক্ষ্যবস্তু করছে বলে অভিযোগ তুলেছিল।
‘প্রাথমিক তদন্তে’ প্রাপ্ত তথ্যের বরাত দিয়ে কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে) জানায়, ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধে অন্তত ৯৫ জন সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকর্মী নিহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৯০ জনই ফিলিস্তিনি। গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের অভিযানে আল–জাজিরার দুই সাংবাদিক নিহত এবং ব্যুরো চিফ ওয়াএল আল-দাহদুহ আহত হন।
চ্যানেলটির ভাষ্য, গাজায় নিরীহ বেসামরিক মানুষদের বিরুদ্ধে দখলদার বাহিনী যে ভয়ংকর অপরাধ করছে, সেই খবর প্রচার থেকে বিরত রাখতে সাংবাদিকদের লক্ষ্যবস্তু বানানো ভয় দেখানোর একটি কৌশল। ইসমাইলকে গ্রেপ্তার করাও এরই একটি অংশ।