মাইন্ডশেপার, বাংলাদেশের দ্রুত বর্ধনশীল কাউন্সেলিং সেবাগুলোর মধ্যে একটি। মাইন্ডশেপারের লক্ষ্য হল কাউন্সেলিং সেবাগুলো সহজলভ্য, অধিগম্য এবং সুবিধাজনক করা ৷ বর্তমান সময়ে হতাশা, দুশ্চিন্তা, মানসিক অশান্তি/সমস্যা বিভিন্ন কারনে অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই জনসাধারণের কাছে মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে উৎসাহমূলক বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে, আমরা মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য সামাজিক অন্তর্ভুক্তি বাড়াতে প্রতিনিয়ত চেষ্টা করে যাচ্ছি। গত ৩ বছর ধরে মাইন্ডশেপার মানসিক স্বাস্থ্য বিকাশে ক্রমাগত ব্যক্তিগত কাউন্সেলিং, কাপল কাউন্সেলিং, পারিবারিক কাউন্সেলিং, গ্রুপ থেরাপি, কর্পোরেট কাউন্সেলিং, একাডেমীক ওয়ার্কশপ সহ বিভিন্ন কাউন্সেলিং এবং ট্রেইনিং দিয়ে আসছে ।
করোনাকালীন সময়ে বিশ্বব্যাপি মানুষের মধ্যে মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি লক্ষ্য করা যায় এবং হতাশা, বিশন্নতা, একাকীত্বসহ নানাবিধ সমস্যার ভুক্তভুগী হন। ২০২১ সালের একটি জরিপে দেখা গিয়েছে, বাংলাদেশে প্রতিবছর গড়ে ১০,০০০ জনের বেশি মানুষ আত্মহত্যা করেন। ২০২১ সালে সর্বমোট ১০১ জন কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করে যা জাতি হিসাবে আমাদের বেশ উদ্বিগ্ন করে তোলে। এই কারণে বর্তমান সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে অধিক সচেতনতা দেখা যায়। বাংলাদেশের অন্যতম বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি এবং মাইন্ডশেপার যৌথ উদ্যোগে শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য বিকাশে কাউন্সেলিং সেবা ও কর্মশালার আয়োজন করে আসছে।
এই সুবাদে, গত ২ অক্টোবর, ২০২২, রবিবার, সকাল ১১.৩০ মিনিটে, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের মনোসামাজিক এবং মানসিক সুস্থতার জন্য পরামর্শক হিসেবে মাইন্ডশেপারের সাথে “সোসিও সাইকি কন্সালটেশন সেন্টার”- এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। মাইন্ডশেপার “সোসিও সাইকি কন্সালটেশন সেন্টার”- এর মাধ্যমে ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য সেবা দেয়ার জন্য চুক্তি স্বাক্ষর করে।
ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির “সোসিও সাইকি কন্সালটেশন সেন্টার” এর উদ্বোধন করেন ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর এম. এম. শাহিদুল হাসান। এই সময় আরো উপস্থিত ছিলেন ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির প্রো-ভিসি – ডক্টর মুহাম্মাদ জিয়াউলহক মামুন, রেজিস্টারার – মাশফিকুর রাহমান, ডিরেক্টর অফ ফাইনান্স – মোহাম্মাদ এখ্লাস উদ্দিন (আফ. সি. এ.), চীফ অফ আইচ আর অ্যান্ড লজিসটিক্স – এম.ডি. জাহিরুল ইসলাম, চীফ টেকনোলজি অফিসার- বি.ই.এম. মনজুর এ খুদা, চেয়ারপার্সন অ্যান্ড এসোসিয়েট প্রফেসর – ডক্টর তাসকিদ জাবিদ (ডিপার্টমেন্ট অফ সি এস ই), চেয়ারপার্সন অ্যান্ড প্রফেসর – ডক্টর সুফিয়া ইসলাম (ডিপার্টমেন্ট অফ ফার্মেসি), চেয়ারপার্সন অ্যান্ড এসোসিয়েট প্রফেসর – ডক্টর ফারহানা ফেরদসি (ডিপার্টমেন্ট অফ বিজনেস অ্যাডমিনিসট্রেসন), চেয়ারপার্সন অ্যান্ড প্রফেসর – ডক্টর ফউযিয়া মান্নান (ডিপার্টমেন্ট অফ সোসিওলোজি), চেয়ারপার্সন অ্যান্ড প্রফেসর – ডক্টর এম.ডি. মোবারক হোসাইন খান (ডিপার্টমেন্ট অফ পপুলেসন অ্যান্ড পাবলিক হেলথ), ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির মেডিকেল সেন্টারের সিনিওর মেডিকেল অফিসার- ডক্টর মোহাম্মাদ আজম খান এবং ডক্টর ফারিদা বেগম।
মাইন্ডশেপারের চেয়ারম্যান এবং সহ-প্রতিষ্ঠাতা “মোহাম্মদ শাহরিয়ার খান উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বলেন- “জিওগ্রাফিক্যাল ডিপেন্ডেন্সির সকল প্রব্লেম এর মধ্যে থেকেও আমরা যেন মাইন্ডফুলনেস চর্চার মাধ্যমে আমাদের স্ট্রেস কমাতে পারি এবং জীবন যাত্রার মান বাড়াতে পারি এটাই মাইন্ডশেপারের উদ্দেশ্য। ছাত্র/ছাত্রীদের কাউন্সেলিং সেবা প্রদান এবং পর্যবেক্ষণ এর মাধ্যমে তাদের মানসিক সুস্থতা নিশ্চিত করাই মাইন্ডশেপারের মূল লক্ষ্য”। আরও উপস্থিত ছিলেন মাইন্ডশেপারের ভাইস প্রেসিডেন্ট – রাশিক জুলকার নাইন, ক্লিনিকেল অ্যান্ড কাউন্সেলিং সাইকোলজিস্ট- শওমিক তাবাসসুম কথা এবং মিস আম্বিয়া খাতুন, মার্কেটিং ম্যানেজার- সায়েদ তাজিম শাফি এবং সোশ্যাল মিডিয়া অ্যান্ড কন্টেন্ট এক্সিকিউটিব- তাবাসসুম ইসলাম নাবিলা।
এর আগে গত ২৮-৩১ আগস্ট, ২০২২ মাইন্ডশেপার ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষার্থীদের জন্য “মানসিক ও শারীরিক সুস্থতার জন্য ৪দিন ব্যাপী প্রোগ্রামের আয়োজন করেছে। প্রোগ্রামটি ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির সকল চলমান শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে আয়োজন করা হয়। প্রথম দুই দিন ওয়ার্কশপের জন্য রেজিস্ট্রেশন চলে। তৃতীয়দিন, ওয়ার্কশপ-১ “শ্রেণীকক্ষে ইতিবাচক মনোবিজ্ঞানের অনুশীলন” এর উপর পরিচালিত হয়। ওয়ার্কশপের বক্তা ছিলেন সারজাম আরবি (শিল্প/সাংগঠনিক মনোবিজ্ঞানী) এবং চতুর্থদিন, ওয়ার্কশপ-২ “ফাংশনাল ফিটনেস ও লাইফস্টাইল ফর স্টুডেন্টস ” এর উপর অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই ওয়ার্কশপের বক্তা ছিলেন মিনহাজ রেমো (পারফরম্যান্স এবং ফিটনেস কোচ)। ওয়ার্কশপগুলোর উপর পর্যবেক্ষণ করে জানা গিয়েছে শিক্ষার্থীদের মন এবং মানসিক স্বাস্থ্য বিকাশে কাউন্সেলিং প্রক্রিয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং কার্যকরী।
মানসিক সুস্থতার প্রচার এবং মানসিক সুস্বাস্থ্যকে সমর্থন করে একটি সুন্দর ও সুস্থ ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির “সোসিও সাইকি কন্সালটেশন সেন্টার”- এর মূল উদ্দেশ্য ।