বর্তমান সময়ের তরুণ প্রজন্মের মাঝে মানসিক সমস্যা প্রকট হয়ে উঠছে। উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা ও দুশ্চিন্তায় আক্রান্ত হচ্ছেন তারা। শারীরিক সমস্যায় যেমন সবাইকে কাছে পান, মানসিক সমস্যায় ঠিক সেভাবে কাউকে কাছে পান না। এমনকি ব্যক্তি নিজেও কাউকে তার সমস্যার কথা শেয়ার করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন না। করোনা -পরবর্তী শিক্ষার্থীদের মাঝে বেড়েছে মানসিক সমস্যা।
হতাশা নিয়ে আত্মহত্যা করেছেন অনেক শিক্ষার্থী। এমন প্রেক্ষাপটে মানসিক স্বাস্থ্যসেবার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে কাজ করেছেন।একদল স্বেচ্ছাসেবী শিক্ষার্থী। তারা সবাই ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সোশ্যাল সার্ভিসেস ক্লাবের সদস্য। সংগঠনটি ২০১১ সাল থেকে নানা কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যসেবা দিতে ও কাউন্সেলিং করার জন্য তিন দিনব্যাপী একটি সেমিনার ও একক কাউন্সেলিং সেবার আয়োজন করেন। ইউআইইউ সোশ্যাল সার্ভিসেস ক্লাবের স্বেচ্ছাসেবীরা।
সেমিনারে মনোবিদ বিশেষজ্ঞ রাবেয়া সিকদার সাথী, ফারজানা খানম এবং সারজাম আরবি ছাত্র-ছাত্রীদের
মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে জ্ঞান ও সচেতনতা বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে স্বাস্থ্যের মহত্ত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেন।
মানসিক স্বাস্থ্যসেবা নিতে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের এককভাবে মনোবিদের সঙ্গে কথা বলার জন্য একক কাউন্সেলিং সেবায় মোট ১৬৬ জন ছাত্র-ছাত্রী রেজিস্ট্রেশন করেন। তাদের মধ্যে থেকে ৪৭ জনকে একক কাউন্সেলিং সেবা প্রদান করেন চিকিৎসকরা।
সেমিনারের শেষ দিন ছাত্র-ছাত্রীদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে আলোচনায় কীভাবে সমস্যাগুলো মোকাবেলা করতে হয়। তা নিয়ে বিভিন্ন পরামর্শ দেন মনোবিদরা। সেমিনারের পর মনোবিদরা একটি জরিপ পরিচালনা করেন। যে জরিপে ভিন্ন ক্যাটাগরির মানসিক সমস্যাগুলোও চিহ্নিত করা হয়। যেখানে বেশির ভাগ ছাত্র-ছাত্রীর ডিপ্রেশনের মাত্রা ছিল সবচেয়ে বেশি। জরিপে আরো দেখা যায়, ২১-২৭ বছরের ছাত্র-ছাত্রীরা ডিপ্রেশনে বেশি ভোগেন। যেখানে নারীদের চেয়ে পুরুষের সংখ্যা বেশি। মনোবিদরা আশা প্রকাশ করেন ধরনের আয়োজন ছাত্র-ছাত্রীদের মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে আরো সচেতন হতে সাহায্য করবে।
ইউআইইউ সোশ্যাল সার্ভিসেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইইই বিভাগের শিক্ষার্থী মিফতাহুর রহমান হিমেল বলেন, ‘প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এ ক্লাবের স্বেচ্ছাসেবীরা বছরব্যাপী নানা আয়োজন করে আসছেন। তার অংশ হিসেবেই মানসিক স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে কাজ করা। এছাড়া এ ক্লাবের মূল সেবামূলক প্রোগ্রামের মাধ্যমে রয়েছে শীতবস্ত্র বিতরণ, বন্যার্তদের ত্রাণ, এতিম বাচ্চাদের নিয়ে ইফতার, রক্তদান কর্মসূচি ও রক্তদাতার ডাটা সংগ্রহ, বৃদ্ধাশ্রমে বয়স্কদের সহায়তা। এছাড়া নানা ধরনের সামাজিক সমস্যা নিয়ে সেমিনারের আয়োজন করা হয়।