ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধবিরতির আলোচনায় কোনো অগ্রগতি হয়নি বলে জানিয়েছেন হামাস নেতা ওসামা হামদান। একই সঙ্গে স্বাধীনতাকামী এ সংগঠনের হাতে জিম্মি থাকা বাকিদের মুক্তির বিষয়টিও এখনো আলোর মুখ দেখেনি। এই জিম্মিদের মুক্তির দাবিতে গত শনিবার ইসরায়েলে বিক্ষোভ করেছেন লাখো মানুষ।
লেবাননে এক সংবাদ সম্মেলনে আজ রোববার ওসামা হামদান বলেন, গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধের আলোচনায় এখনো পর্যন্ত সত্যিকার অর্থে কোনো অগ্রগতি আসেনি। স্থায়ী যুদ্ধবিরতি, গাজা থেকে সম্পূর্ণ সেনা প্রত্যাহার ও অর্থবহ বন্দিবিনিময় সমঝোতা নিশ্চিত করবে—এমন যেকোনো প্রস্তাব ইতিবাচকভাবে নিতে প্রস্তুত রয়েছে হামাস।
গাজায় যুদ্ধবিরতি ও বন্দিবিনিময় নিয়ে গত মাসেই একটি পরিকল্পনা তুলে ধরেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। পরিকল্পনাটি ইসরায়েলের প্রস্তাব করা বলে দাবি করেছিলেন তিনি। পরিকল্পনায় প্রাথমিকভাবে গাজায় ছয় মাসের যুদ্ধবিরতি, উপত্যকার ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা থেকে ইসরায়েলি সেনাদের সরিয়ে নেওয়া ও ইসরায়েলি জিম্মি মুক্তিসহ নানা বিষয় তুলে ধরা হয়েছিল।
গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় নির্বিচার হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। স্থানীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ হামলায় এখন পর্যন্ত ৩৭ হাজার ৮৭৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহতের সংখ্যা ৮৭ হাজার ছুঁই ছুঁই। ফিলিস্তিনি শরণার্থীবিষয়ক জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ বলেছে, ‘অসহনীয়’ দুর্দশার মধ্যে রয়েছেন গাজার বাসিন্দারা।
‘নেতানিয়াহুর হাতে জিম্মিদের রক্ত’
গাজায় আটক থাকা জিম্মিদের ফিরিয়ে আনতে অবিলম্বে চুক্তি সই ও আগাম নির্বাচনের দাবিতে ইসরায়েলে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। রাজধানী তেল আবিবে প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার বিক্ষোভকারী জমায়েত হয়েছেন বলে আয়োজকেরা জানান।
গতকাল শনিবার এ বিক্ষোভে হামাসের হাতে জিম্মি ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরা বক্তব্য দেন। এক জিম্মির স্বজন বলেন, ‘বন্দিবিনিময় চুক্তির অংশ হিসেবে যুদ্ধ বন্ধ না করতে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর জেদ আমাদের ও আমাদের প্রিয়জনের মাঝখানে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
গাজায় হামাসের হাতে বন্দী থাকা অবস্থায় মারা যান ৮০ বছর বয়সী ইয়োরাম মেৎসগার। নেতানিয়াহুর উদ্দেশে তাঁর পুত্রবধূ এল মেৎসগার বলেন, ‘যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার মানে হলো জিম্মিরা ইসরায়েলি সরকারের হাতে মারা যাবে। আপনার হাত রক্তে রঞ্জিত। প্রতিবার শেষ মুহূর্তে সব সমঝোতা নস্যাৎ করে দেন নেতানিয়াহু। পরবর্তী চুক্তি আটকে দেওয়া থেকে অবশ্যই নেতানিয়াহুকে থামাতে হবে।’