রেজা সাহেবের শরীরটা আজকাল বেশ ভারী লাগছে, আগের পোশাকগুলো সব আট সাট হয়ে গেছে। ভাবছেন ওজন বেড়ে গেল কিনা – কিন্তু এত ব্যস্ততার ভিরে তাঁর ওজন আর মাপা হয়ে ওঠেনা। তখন মনে হয় বাসায় একটা ওজন মাপার মেশিন থাকলে কতই না ভালো হত। লুনা অফিস থেকে এসে একদিন হঠাৎ সন্তানের গায়ে জ্বর দেখে চিন্তায় পরে গেলেন। এদিকে বাসায় থাকা থার্মোমিটারটি যে কবে অকেজো হয়ে গেছে তার খেয়াল কেউ রাখেনি। বাড়ি থেকে ওষুধের দোকান বা হাসপাতালটিও বেশ দূরে আর এতো রাতে সেবা পাওয়াও দুরূহ ব্যপার। রুমি সাহেবের বৃদ্ধা মায়ের হঠাৎ ডায়াবেটিস টেস্ট স্টিপ শেষ আর বাইরে গিয়ে কিনে নিয়ে আসার মতোও কেউ নেই।
কাজের চাপে একদিন আপনার ঘাড় ব্যথা শুরু হলে আপনি আপনার ডাক্তার বন্ধুকে ফোন দিয়ে পরামর্শ চাইলে তিনি বললেন ব্লাড প্রেশার মেপে দেখতে কিন্তু সময় সুযোগ করে প্রেশার মাপতে যাওয়াও কঠিন। এমন বিপাকের মূহুর্তে সকলকেই ঘাবড়ে যেতে হয়, কি করবেন ভেবে পান না। মনে হয় – যদি আলাদিনের যাদুর চেরাগ হাতে থাকতো! তবে হয়ত এসকল অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সামাল দেয়া যেত। আলাদিনের চেরাগ কিন্তু আপনার ধারের কাছেই রয়েছে৷ আর এই চেরাগের নাম হলো ‘মেডিস্টোর’। চলুন তবে আধুনিক যুগের এই আলাদিনের চেরাগের সাথে পরিচিত হয়ে নেয়া যাক –
‘মেডিস্টোর ‘ – নামটি শুনে নিশ্চয়ই ভাবছেন মেডিকেল বা মেডিসিনের সাথে এর কোনো সম্পর্ক আছে কিনা! একদম ঠিক ধরেছেন – মেডিস্টোর হলো বাংলাদেশের প্রথম এবং সর্ববৃহৎ মেডিকেল সরঞ্জামাদি বিক্রয়ের অনলাইন মাধ্যম। স্বাস্থ্যসুরক্ষা বা সৌন্দর্যবর্ধন সম্বন্ধীয় যেকোন পণ্যের প্রয়োজনে মেডিস্টোর আছে আপনার সেবায়। আঙুলের এক ছোয়াতেই পছন্দমতো প্রয়োজনীয় পণ্য পৌঁছে যাবে আপনার দোরগোড়ায়। অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছে? বলেছিলাম না – মেডিস্টোর আলাদিনের চেরাগের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়!
একুশ শতকের এ পর্যায়ে এসে জীবন যে কি ভীষণ ব্যস্ত হয়ে গেছে তা বলা দায়। সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে প্রতিদিন দৌড়াতে হয় – বসের সন্তুষ্টি, ডেডলাইন, মিটিংয়ের পর মিটিং, সন্তানের খেয়াল রাখা – এতসব কাজের ভিরে নিজের স্বাস্থ্যের দিকে তাকানোই হয় না, স্বাস্থ্যের যত্ন নেয়া তো দূরের কথা। কিন্তু সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে ছোটার সময় একটু থেমে নিজের দিকে না তাকালে যে লক্ষ্যে পৌঁছানোর চেয়ে হোচট খেয়ে পড়ে যাবার সম্ভাবনাই বেশি তা কি ভেবে দেখেছেন? তবে এই সময়টুকুই বা কিভাবে করবেন? উত্তর খুবই সহজ – এ কাজটি আপনার হয়ে করে দেবে মেডিস্টোর। মেডিস্টোর তাদের বিশাল পণ্যের ভান্ডার থেকে আপনার জন্য উপযুক্ত পণ্যটি আপনাকে সরবরাহ করে স্বাস্থ্য রক্ষার অনেক ঝামেলা কমিয়ে দিবে।
কি নেই এই অনলাইন শপটিতে! ডায়াবেটিস মিটার, ডায়াবেটিস টেস্ট স্টিপ, থার্মোমিটার, ডিজিটাল ওয়েট স্কেল, ডিজিটাল ব্লাড প্রেশার মেশিন, হট ওয়াটার ব্যাগ, ফার্স্ট এইড বক্স সহ সকল স্বাস্থ্যসুরক্ষার পণ্যের বিশাল সম্ভার আপনাকে অবাক করতে বাধ্য।আপনি যদি কোনো ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সাথে জড়িত হন বা কোনো ল্যাবরেটরির দায়িত্বে থাকেন তবে আপনার জন্য রয়েছে খুশির খবর। কারণ মেডিস্টোর তাদের সংগ্রহে রাখে – আল্ট্রাসোনোগ্রাফ, ই সি জি, এক্স রে, হরমোন, বায়োকেমিস্ট্রি এনজাইনার সহ বিভিন্ন ধরনের ডায়াগনস্টিক ও ল্যাবরেটরিতে প্রয়োজনীয় পণ্য।
অবাক করা এই প্রতিষ্ঠানটির যাত্রা কিভাবে শুরু হলো? পেছনের গল্প বলতে গিয়ে মেডিস্টোর – এর সিইও কামরুল হাসান জানান, অনেক ঝক্কিঝামেলা পোহায়ে মাত্র ঢাকায় এসেছি। হাতে সামান্য কিছু টাকা। যা নতুন করে কিছু শুরু করার জন্য একেবারেই অপ্রতুল। এই বড় শহরে আমার পরিচিত তেমন কেউওই ছিলো না। তেমন কারো সাথে পরিচয়ও নেই। যদিও আমি আত্মকেন্দ্রিক, তবুও কখনো ভাবিনি যে, আমাকে দিয়ে এটা হবেনা, ওটা হবেনা। তবে, এবার আর টাকা নয়, আগের লস করাটাকেই পুঁজি হিসেবে নিয়েছি। তবে ব্যবসাটা শুরু করি খুব অল্প পুঁজিতে। ২০১৪ এর শুরুতে আরেক বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার সহ দুই বন্ধুমিলে পল্টনে একটা রুম নিয়ে শুরু করি “ওয়েব ডিজিটাল টেকনোলজি” নামক মেডিক্যাল ইকুইপমেন্ট সেলস এন্ড সার্ভিস সেন্টার। বছর দুয়েক পর সেটি আর একসাথে চালানো যায়নি। তারপর বেরিয়ে এলাম ওখান থেকে।
এবার নিজে কিছু একটা করার অদম্য ইচ্ছা নিয়েই ঘুরে বেড়াচ্ছি। চাকরীটা যখন মেডিকেল টেকনোলজিতেই করেছি, তাই হেলথকেয়ার রিলেটেড কিছু করাটাই সুইটেবল মনে করেছিলাম। ওয়েব ডেভলপার খুবকাছের এক কাজিনের পরামর্শে অনেক ভেবেচিন্তে একদিন অল্পকরে শুরু করি “মেডিস্টোর” নামক এই প্রতিষ্ঠানটি। চলার পথটা কখনোই মসৃণ ছিলোনা। এমনিতেই এদেশের মানুষ এখনও খুব একটা অনলাইনে কেনাকাটা করেনা। তাছাড়া এই সব পণ্যর ক্রেতাও অনলাইনে খুব একটা নেই। তাই খুব ধীরে ধীরে এগোতে হচ্ছে।
শুরুটা যখন প্রায় শূন্য থেকেই করেছি, তাই পরিশ্রমটাও বেশ করতে হচ্ছিলো। আমি সহ মাত্র ৩জনে মিলে কাজ করি। সাইট ডিজাইন, ব্র্যান্ডিং, অনলাইন মার্কেটিং, প্রোডাক্ট কালেকশন, প্রসেসিং, ডেলিভারী সব এই ৩ জনকেই করতে হচ্ছে। শুরুতে অনলাইনে বেচাকেনাটাও খুব বেশী ছিলোনা। এমনও দিন গেছে ২৪ ঘন্টার মধ্যে ১৩/১৪ ঘন্টা বাইরে কাজ করেও, রাতে বাসায় ফিরে ৩/৪টা অব্দি কম্পিউটারে বসে আবার সাইটের অন্যান্য কাজ করতে হয়েছে। তাও মাত্র ১/২টা অর্ডার ছিলো। এভাবেই একটু একটু করে এগিয়ে আজকে বড় একটি টিমের প্রতিষ্ঠান মেডিস্টোর। ব্যবসা শেখার প্রয়াসে নিজেই প্রথমে প্রোডাক্ট সংগ্রহ করে তা আবার সারাদিনে ঘুরে ঘুরে সারা ঢাকা শহরে ডেলিভারী করতাম। যখন শুরু করেছিলাম তখন আমি নিজেও ভাবতে পারিনি যে সেই মেডিস্টোরই একদিন হবে কোটি টাকার এক সফল প্রতিষ্ঠান!
এই প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশের সফল উদ্যোগের একটি উপযুক্ত উদাহরণ। মেডিস্টোর বর্তমানে যেভাবে মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি করছে ও সকলের দ্বারে তাদের সেবা পৌঁছে দিচ্ছে, তা দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখছে।
মেডিস্টোর কি তা তো বোঝা গেল কিন্তু আসল প্রশ্নের উত্তরই তো দেয়া হলো না! আমরা কিভাবে মেডিস্টোরের সেবা ভোগ করব? আপনি অফিসে বসে কম্পিউটার থেকে বা নিজের বাসায় বসে ফোন থেকে হাতের একটি ছোঁয়াতেই আপনার স্বাস্থ্যসুরক্ষার ও সৌন্দর্যবর্ধনের এসকল চাহিদা মিটিয়ে ফেলতে পারেন।
মেডিস্টোর এর সেবা উপভোগ করার প্রক্রিয়া আলাদিনের চেরাগ থেকে জিনকে ডাকার মতোই সহজ। প্রথমে মেডিস্টোর এর ওয়েবসাইটে গিয়ে তাদের পণ্যের বিশাল সম্ভার থেকে আপনার মনের মতো পণ্যটি খুজে নিয়ে বাছাই করুন। তারপর পছন্দমতো পণ্য অর্ডার প্লেস করুন বা অর্ডার নিশ্চিত করুন। এ পর্যায়ে এসে আপনার নাম-ঠিকানা সহ কিছু প্রয়োজনীয় ব্যক্তিগত তথ্য দরকার হবে। অর্ডার প্লেস করার মাত্র ১২-২৪ ঘন্টার মধ্যেই পণ্য ঠিকানায় ডেলিভারি করার নিশ্চয়তা দিচ্ছে মেডিস্টোর।আপনি ঢাকার বাইরে থাকেন বলে এই সেবা থেকে বাদ পরবেন কিনা ভাবছেন? চিন্তার কোনো কারণ নেই – ঢাকার বাইরেও মাত্র ২৮-৪৮ ঘন্টার মাঝেই ডেলিভারি নিশ্চিত করছে তারা। তাদের সকল পণ্যে রয়েছে ৭ দিনের রিপ্লেসমেন্ট গ্যারান্টি। তাদের ডায়াবেটিক টেস্ট মিটারে আছে লাইফ টাইম রিপ্লেসমেন্ট গ্যারান্টি। ডিজিটাল ওয়েট স্কেল, ডিজিটাল ব্লাড প্রেশার মেশিন, ডিজিটাল থার্মোমিটার সহ যেকোন পণ্যে পাচ্ছেন ১-৫ বছরের ওয়ারেন্টি/গ্যারান্টি।
মেডিস্টোর সর্বদা মনে প্রাণে আপনার সেবায় নিয়োজিত। মেডিস্টোর বছরের ৩৬৫ টি দিন এবং সপ্তাহের সাতটি দিনই খোলা। শুধু তাই নয় মেডিস্টোর দিন-রাত ২৪ ঘন্টা আপনার সেবায় নিজেদেরকে বিলিয়ে দেয়ার জন্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
এই প্রতিষ্ঠান মেনে চলে চারটি মূলমন্ত্র – মানসম্পন্ন পণ্য, গ্রাহকের সন্তুষ্টি, বিক্রয়োত্তর সেবা নিশ্চিতকরন এবং বিশ্বাস ও মূল্যবোধ। মেডিস্টোর এর পণ্যের মান সম্পর্কে সন্দেহ পোষণের কোনো অবকাশ নেই। আপনার স্বাস্থ্যসুরক্ষা ও সৌন্দর্যবর্ধনের সকল পণ্যের প্রয়োজন মেটাতে মেডিস্টোর সর্বদা তৈরি ও সর্বদা তৎপর। তাই দেরি না করে তাদের ওয়েবসাইটটি https://www.medistorebd.com/ ঘুরে আসুন – কথা দিচ্ছি যে নিরাশ হবেন না।