চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে ফেনী নদীসংলগ্ন কয়েকটি ইউনিয়নে বন্যার পানি কমছে না। এসব ইউনিয়নের মধ্যে করেরহাট, ধুম ও হিঙ্গুলীর অনেক বাসিন্দা আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন। উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে পানিবন্দী মানুষকে উদ্ধারে কাজ করছে সেনাবাহিনী ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।
মিরসরাই উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এবারের বন্যায় উপজেলার করেরহাট, ধুম, হিঙ্গুলী, ওচমানপুর, কাটাছড়া, ইছাখালী, খৈয়াছড়া ও মায়ানী ইউনিয়ন সবচেয়ে বেশি প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী মানুষের নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য খোলা হয়েছে ৭৯টি আশ্রয়কেন্দ্র। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত এসব আশ্রয়কেন্দ্রে অন্তত ছয় হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্রয়কেন্দ্রে বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে। পানিবন্দী মানুষকে উদ্ধার ও চিকিৎসাসেবা দিতে উপজেলার জোরারগঞ্জ ও করেরহাট ইউনিয়নে দুটি ক্যাম্প করেছে সেনাবাহিনী।
উপজেলার মিরসরাই সরকারি উচ্চবিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে তিন মাস বয়সী ছেলেকে নিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে আশ্রয় নিয়েছেন বিবি আফরোজা। তিনি উপজেলার মিরসরাই সদর ইউনিয়নের জাফরাবাদ আদর্শগ্রামের বাসিন্দা। আফরোজা বলেন, তাঁর ঘরের ভেতর কোমরসমান পানি উঠেছে। কিছু স্বেচ্ছাসেবী গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে এসেছেন।
করেরহাট ইউনিয়নের পশ্চিমজোয়ার এলাকার বাসিন্দা আফতাব উদ্দিন বলেন, তাঁর ঘরের নিচতলায় গলাসমান পানি। পরিবার নিয়ে ছাদে আশ্রয় নিয়েছেন তিনি। কোনো রকমে বেঁচে রয়েছেন। পানি নামার কোনো লক্ষণ দেখছেন না।
মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহফুজা জেরিন বলেন, মিরসরাইয়ে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নের জন্য ১৬টি মনিটরিং টিম করা হয়েছে। এখনো প্রায় এক লাখ মানুষ পানিবন্দী। এর মধ্যে মাত্র ছয় হাজার মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনা সম্ভব হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এরই মধ্যে বন্যাদুর্গত মানুষদের সরকারের পক্ষ থেকে ৫০ টন চাল ও নগদ ৪ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। উদ্ধারকাজ পরিচালনা, চিকিৎসাসেবা প্রদান ও খাবার পানি সরবরাহে সেনাবাহিনী ও স্বেচ্ছাসেবীরা যথেষ্ট সহযোগিতা করছেন।