তাইওয়ানের চারপাশে সামরিক মহড়া শুরু করেছে চীনের যুদ্ধবিমান ও যুদ্ধজাহাজ। তাইওয়ান বলেছে, চীন উসকানি দিচ্ছে। গতকাল সোমবার (১৪ অক্টোবর) থেকে এই সামরিক মহড়া শুরু করেছে চীন। এরপর তাইওয়ানের চারপাশে রেকর্ড সংখ্যক চীনা সামরিক বিমান শনাক্ত করা হয়েছে।
তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সামরিক মহড়ার সময় ১৫৩টি চীনা যুদ্ধবিমান তার চারপাশে ঘিরে রেখেছিল। দ্বীপটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলে, যুদ্ধবিমানের তৎপরতা বৃদ্ধির ফলে সোমবার রাত ১০টা (গ্রিনিচ মান সময়) থেকে মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৫ ঘণ্টায় রেকর্ড সংখ্যক বিমান চিহ্নিত করা হয়েছে। মন্ত্রণালয় আরো জানায়, চীনের এই যুদ্ধ মহড়া আবারও তাইওয়ান এবং সমগ্র অঞ্চলে উত্তেজনা বাড়িয়ে তুলেছে।
সোমবার বেইজিং যুদ্ধবিমান, ড্রোন, যুদ্ধজাহাজ এবং কোস্টগার্ড জাহাজ মোতায়েন করে তাইওয়ানকে ঘিরে ফেলে। তাইপে জানিয়েছে, তারাও সামরিক বাহিনী মোতায়েন করে বাইরের দ্বীপগুলোতে উচ্চ সতর্কতা জারি করেছে।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, চীনের ৯০টি বিমান তাইওয়ানের বিমান প্রতিরক্ষা শনাক্তকরণ অঞ্চলের মধ্যে চিহ্নিত করা হয়েছে।
বেইজিং তাইওয়ানকে তার ভূখণ্ডের অংশ হিসেবে বিবেচনা করে এবং বলেছে যে, তারা কখনোই শক্তি প্রয়োগের সম্ভাবনা বাতিল করবে না। অর্থাৎ, তাইওয়ানকে চীনের অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা চালিয়ে যাবে।
চীন জানিয়েছে, একদিনের এই মহড়াকে বলা হচ্ছে ‘জয়েন্ট সোর্ড-২০২৪বি’। ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী কর্মকাণ্ডের’ বিরুদ্ধে এটি ছিল বেইজিংয়ের সতর্কবার্তা। গত সপ্তাহে জাতীয় দিবসের ভাষণ দেন তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম লাই চিং-তে। সেই ভাষণের নিন্দা জানিয়েছিল বেইজিং। তারই ধারাবাহিকতায় চীন এই যুদ্ধ মহড়া আয়োজন করেছে। চীনের তাইওয়ান বিষয়ক কার্যালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, তাইওয়ান স্বাধীন বলে লাই চিং-তে যেভাবে অবিরাম ভিত্তিহীন বক্তব্য দিচ্ছেন সেটার শাস্তি এই মহড়া।
লাই তার বক্তৃতায় বলেছিলেন, তাইওয়ানকে প্রতিনিধিত্ব করার অধিকার চীনের নেই। তিনি যেকোনো আক্রমণ প্রতিহত করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছিলেন।
তাইওয়ানের প্রধানমন্ত্রী চো জুং-তাই বলেছেন, এই মহড়াগুলো শুধু তাইপের জন্য নয়, বরং পুরো অঞ্চলের জন্য উদ্বেগের বিষয়। তিনি বলেন, আগাম কোনো সতর্কতা ছাড়া যে কোনো মহড়া পুরো অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতায় বড় ধরনের বিঘ্ন ঘটাবে। চীনের মহড়া শুধুমাত্র তাইওয়ানের প্রতিবেশী এলাকাকে প্রভাবিত করে না, বরং সমগ্র আন্তর্জাতিক নৌ-অধিকার এবং আকাশ ও সমুদ্রসীমার ওপর গুরুতর প্রভাব ফেলে। যার ফলে অন্যান্য দেশের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে।