২০১৯ সালে ভারতশাসিত কাশ্মীরের আধা স্বায়ত্তশাসিত রাজ্যের মর্যাদা প্রত্যাহার করার পর মুসলিম-সংখ্যাগরিষ্ঠ এ উপত্যকায় আজ বৃহস্পতিবার প্রথমবারের মতো সফরে গেলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
ভারতের সাধারণ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার কয়েক সপ্তাহ আগে শ্রীনগরে জনসভায় ভাষণ দেবেন মোদি।
নরেন্দ্র মোদির রাজনৈতিক দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে অনুষ্ঠেয় এ জনসভায় হাজার হাজার লোককে জড়ো করার পরিকল্পনা করেছে।
১৯৮০-র দশক থেকে বিরোধপূর্ণ কাশ্মীর উপত্যকায় ভারতীয় শাসনের বিরুদ্ধে চলা সহিংস বিদ্রোহে হাজার হাজার মানুষ মারা গেছে।
নির্বাচনে পুনরায় জিতে ২০১৯ সালে নরেন্দ্র মোদি সরকার ভারতীয় সংবিধান থেকে ৩৭০ অনুচ্ছেদ তুলে প্রচারাভিযানের প্রতিশ্রুতি পূরণ করেছে। জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের জন্য নিজস্ব পতাকা, সংবিধান, আইনসভা, আইনকানুনসহ উল্লেখযোগ্য স্বায়ত্তশাসনের অধিকার দিয়েছিল এ অনুচ্ছেদ।
জম্মু ও কাশ্মীর ছিল ভারতের একমাত্র রাজ্য যেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম জনগোষ্ঠীর বসবাস। অনুচ্ছেদ ৩৭০ বাতিলের পর ১ কোটি ২০ লাখ বাসিন্দার এ রাজ্যকে কেন্দ্রীয় সরকারের সরাসরি নিয়ন্ত্রণাধীন দুটি অঞ্চল জম্মু ও কাশ্মীর এবং প্রত্যন্ত পার্বত্য অঞ্চল লাদাখে ভাগ করা হয়।
এ পদক্ষেপের আগে রাজ্যটিতে কয়েক হাজার অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করা হয়; যা স্থানীয় মানুষকে অবাক করে এবং এখানকার স্বাভাবিক জীবন বিঘ্নিত করে তোলে। তবে ভারতে নরেন্দ্র মোদির সমর্থকদের অনেকেই এ পদক্ষেপের সঙ্গে একমত ছিলেন।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, মোদির এ সফর আসন্ন নির্বাচনে এই অঞ্চলে বিজেপির নির্বাচনী প্রচারের সুর ঠিক করবে।
বিজেপি নেতারা বলছেন, সফরে প্রধানমন্ত্রী মোদি এ অঞ্চলের জন্য বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের ঘোষণা দিতে পারেন। যেমনটি গত ফেব্রুয়ারিতে জম্মু সফরের সময় করেছিলেন তিনি।
ভারতের সুপ্রিম কোর্ট গত ডিসেম্বরে ৩৭০ ধারা বাতিলকে বহাল রেখেছেন। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট বলেন, সরকার জম্মু-কাশ্মীরের রাজ্যের মর্যাদা পুনরুদ্ধারের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বাস্তবায়ন করা উচিত।
জনসভায় ভাষণ দেওয়ার আগে শ্রীনগরে ভারতীয় সেনা সদর দপ্তরে যাবেন মোদি। সেখানে ভারতীয় বাহিনীর উপস্থিতি একটি বিতর্কিত বিষয় হয়ে রয়েছে। নিরাপত্তাকর্মীদের বিরুদ্ধে বছরের পর বছর মানবাধিকার লঙ্ঘন ও অন্যান্য অসদাচরণের অভিযোগ উঠছে।
এদিকে প্রধানমন্ত্রী মোদির সফরের আগে শ্রীনগরের রাস্তাগুলো পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে এবং তাঁকে স্বাগত জানাতে বিলবোর্ড লাগানো হয়েছে।
মোদি যেখানে ভাষণ দেবেন, সেই বকশি স্টেডিয়ামের পাহারায় শত শত নিরাপত্তাকর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। এ ছাড়া শ্রীনগরের ভেতর ও বাইরে চলাচল করা যানবাহন তল্লাশি করা হচ্ছে।