ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে বন্যার পানি। বন্যায় দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের বন্যাকবলিত ১১ জেলার নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা অচল হয়ে পড়েছিল। তবে পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে সচল হতে শুরু করেছে এসব অঞ্চলের মোবাইল টাওয়ার। বর্তমানে বন্যাকবলিত এলাকা প্রায় ৯৮ শতাংশ টাওয়ারই সচল হয়েছে।
শুক্রবার (৩০ আগস্ট) বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) অস্থায়ী পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণকক্ষ এ তথ্য জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) বিকাল ৫টা পর্যন্ত হালনাগাদ করা তথ্য অনুসারে, দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ১১ জেলায় এখনও টেলিযোগাযোগ পরিষেবা ব্যাহত হচ্ছে। জেলাগুলো হলো নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, মৌলভীবাজার, সিলেট, হবিগঞ্জ, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, ও কক্সবাজার।
প্রাপ্ত তথ্যানুসারে, এসব জেলার মধ্যে নোয়াখালীতে ৭১টি, লক্ষ্মীপুরে ২০টি, ফেনীতে ৭৩টি, কুমিল্লায় ১৮টি, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ২৪টি, চট্টগ্রামে ২৭টি, খাগড়াছড়িতে সাতটি, হবিগঞ্জে ১৩টি, মৌলভীবাজারে ৯টি, সিলেটে ২৭টি ও কক্সবাজারে ১১টিসহ মোট ৩০০টি টাওয়ার অচল হয়ে আছে।
বন্যাকবলিত এসব জেলায় মোট ১৪ হাজার ৫৫১টি টাওয়ার রয়েছে। যার মধ্যে সচল রয়েছে ১৪ হাজার ২৫১টি। ফলে অচল টাওয়ারের সংখ্যা মাত্র ২ দশমিক ১ শতাংশ।
বিটিআরসি জানিয়েছে, অচল থাকা বাকি টাওয়ারগুলো সচল করার জন্য বিভিন্নভাবে চেষ্টা চলছে। এর অংশ হিসেবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে মোবাইল অপারেটর এবং টাওয়ারকো অপারেটরদের টেকনিক্যাল লোকবল, নেটওয়ার্ক সরঞ্জাম, জেনারেটর ও জ্বালানি ইত্যাদি পরিবহনের জন্য বিভিন্ন সহযোগিতা করা হচ্ছে। জানা গেছে, গ্রামীণফোন, রবি এবং বাংলালিংক অপারেটরকে একটি করে ট্রাক ও স্পিডবোট সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বন্যার পানি কমতে থাকায় বিভিন্ন জায়গায় সড়কপথে যোগাযোগের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। এ জন্য টাওয়ারকো অপারেটর সামিট ও ইডটকোর চাহিদা অনুযায়ী সমন্বয়ের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ট্রাক সরবরাহ করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, উজান থেকে নেমে আসা ঢল এবং অব্যাহত বৃষ্টির কারণে দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় বন্যা দেখা দেয়। পানির পরিমাণ ও উচ্চতা বেশি হওয়ায় এসব এলাকার মোবাইল অপারেটর কোম্পানির টাওয়ারের গ্রিন ফিল্ডও ডুবে যায়। ফলে গত ২২ আগস্ট থেকে টাওয়ারের সংযোগ অচল হতে শুরু করে। বন্যায় প্রায় দুই হাজারের বেশি টাওয়ার অচল হয়ে পড়েছিল, যা ক্রমেই মেরামতের করে সচল করা হচ্ছে।