দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি ডাক বিভাগ এবং ‘নগদ’কে জড়িয়ে বিভ্রান্তিমূলক অপপ্রচার না করতে সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ডাক অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. সিরাজ উদ্দিন।
বৃহস্পতিবার (৯ সেপ্টেম্বর) এক ভিডিও বার্তায় ডাক অধিদফতরের মহাপরিচালক বলেন, ‘নগদ’ ডাক বিভাগের সঙ্গে রাজস্ব আয়ের অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে পরিচালিত একটি মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সেবা, যা মাত্র আড়াই বছরে দেশের প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি মানুষকে আর্থিক লেনদেনের মধ্যে এনেছে।
তিনি আরো বলেন, ২০১৭ সালে থার্ড ওয়েভ টেকনোলজিস লিমিটেডের সঙ্গে ডাক বিভাগের চু্ক্তি হয়। তার ভিত্তিতে ‘নগদ’ সেবা দিয়ে যাচ্ছে। ‘নগদ’-এর মালিকানা এবং ডাক বিভাগের সঙ্গে অংশীদারিত্বের বিষয়টি নিয়ে অহেতুক মানুষকে বিভ্রান্ত করার কোনো অবকাশ নেই।
মো. সিরাজ উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী অংশীদারিত্বের জায়গা থেকে ডাক বিভাগ ও ‘নগদ’ (থার্ড ওয়েভ টেকনোলজিস লিমিটেড) কর্তৃপক্ষ এখন মালিকানার পর্যায়ে যাওয়ার প্রক্রিয়ায় রয়েছে। দুই পক্ষের সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতেই ডাক বিভাগ ৫১ শতাংশ এবং ‘নগদ’ ৪৯ শতাংশের মালিক হচ্ছে। বিষয়টি এখন রাষ্ট্রের আইন অনুসারে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে মনগড়া তথ্য পরিবেশন করে মানুষকে অহেতুক বিভ্রান্ত না করার আহ্বান জানান তিনি।
“শতবর্ষী রাষ্ট্রীয় ডাক বিভাগের নবীন আর্থিক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান ‘নগদ’। মাত্র আড়াই বছরে প্রতিষ্ঠানটির অভাবনীয় সাফল্য অনেকের মধ্যে ঈর্ষার জন্ম দিয়েছে, সে কারণে অনেকেই নগদকে নিয়ে চক্রান্ত করছেন। যার প্রমাণ হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) দেওয়া তদন্ত প্রতিবেদন বিশেষভাবে উল্লেখ করা যেতে পারে,”— বলেন মো. সিরাজ উদ্দিন।
ডাক অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. সিরাজ উদ্দিন তার বার্তায় আরও বলেন, “একমাত্র ‘নগদ’ দেশের এমএফএস বাজারের একচেটিয়া আধিপত্য ভাঙতে সক্ষম হয়েছে। সে কারণে অনেকে ‘নগদ’-এর বিরুদ্ধে গুজব ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছেন। এমন হীন ও অপচেষ্টা থেকে সকলে বিরত থাকবেন। রাষ্ট্রীয় একটি সেবার সুন্দর অগ্রযাত্রার জন্য যে কোনো গুজব ও অপপ্রচার প্রতিরোধ করতে সদা প্রস্তুত রয়েছি। মনে রাখবেন, রাষ্ট্রীয় সেবার বিরুদ্ধে যেকোনো ধরনের গুজব ও মিথ্যা রটানো একটি রাষ্ট্রীয় গুরুতর অপরাধ।”
তিনি আরও বলেন, “ট্রাস্ট কাম সেটেলমেন্ট অ্যাকাউন্ট নিয়েও অনেক গণমাধ্যমে কিছু সংবাদ এসেছে। আমি বলছি, ‘নগদ’ সব সময়ই ডাক বিভাগের অনুমোদন নিয়েই নতুন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলে। আমি মনে করি, এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। এই চিঠির কারণে কারো বিভ্রান্ত হওয়ার কোনো অবকাশ নেই।”
বিভ্রান্ত না হয়ে গ্রাহকদের ডাক বিভাগের সেবা ‘নগদ’-এর পাশে থাকার আহ্বান জানিয়ে ডাক অধিদফতরের মহাপরিচালক বলেন, “সাম্প্রতিক সময়ে কয়েকটি ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মের ত্রুটির কারণে কিছু অ্যাকাউন্ট সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে এবং এই তথ্যগুলো যথাযথ কর্তৃপক্ষ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করা হয়েছে। পর্যালোচনার পরে অ্যাকাউন্টগুলো খুলে দেওয়ার প্রক্রিয়া ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। অনাকাঙ্ক্ষিত সাময়িক এই দুর্ভোগের জন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত।
উল্লেখ্য , নানান ধরনের সরকারি ভাতা বিতরণকে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে তুলে আনার কৃতিত্ব দেখানো ‘নগদ’ এখন প্রতিদিন গড়ে ৭০০ কোটি টাকা দৈনিক লেনদেন করছে।