দেশের তৈরি পোশাক খাতের প্রকৃত রপ্তানি সামান্য বেড়েছে। গত অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে পোশাক খাতের প্রকৃত রপ্তানি ছিল ৭১ দশমিক ৩৫ শতাংশ। তার আগের প্রান্তিকে ছিল ৭০ দশমিক ৭৮ শতাংশ। সেই হিসাবে তিন মাসের ব্যবধানে প্রকৃত রপ্তানি বেড়েছে দশমিক ৫৭ শতাংশীয় পয়েন্ট।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক গবেষণা প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। মোট রপ্তানি থেকে কাঁচামাল আমদানি বাদ দিয়ে প্রকৃত রপ্তানি বের করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। প্রতি প্রান্তিকের তথ্য দিয়ে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
গত ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রকৃত পোশাক রপ্তানি ছিল মোট পোশাক রপ্তানির ৫৪ দশমিক ৩৮ শতাংশ। তারপরের ২০২২-২৩ অর্থবছর এক লাফে প্রকৃত রপ্তানি বেড়ে ৬৬ শতাংশ হয়। যদিও গত অর্থবছরের তৃতীয় ও চতুর্থ প্রান্তিকে প্রকৃত রপ্তানি ছিল ৭১ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের প্রথম ও দ্বিতীয় প্রান্তিকে প্রকৃত রপ্তানি ৭১ শতাংশ।
অনেকে প্রকৃত রপ্তানি আয়কে পোশাক খাতের মূল্য সংযোজন হিসেবে অভিহিত করে থাকেন। তবে অর্থনীতিবিদেরা এটিকে মূল্য সংযোজন হিসেবে মানতে নারাজ। তাঁরা বলছেন, পোশাকশিল্পে নির্দিষ্ট একটি সময়ে যে পরিমাণ কাঁচামাল আমদানি করা হয়, সেগুলো রপ্তানির ক্ষেত্রে এক বছরের বেশি সময় ধরে ব্যবহার করা যায়। তাই একটি নির্দিষ্ট সময়ের রপ্তানি আয় থেকে আমদানি ব্যয় বাদ দিয়ে প্রকৃত যে আয় পাওয়া যাবে, সেটিকে প্রকৃত মূল্য সংযোজন বলা যাবে না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের অক্টোবর-ডিসেম্বরে ১ হাজার ১৭৭ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়। তার মধ্যে ৩৩৭ কোটি ডলারের কাঁচামাল আমদানি হয়েছে।
তার মানে এই প্রান্তিকে প্রকৃত পোশাক রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৮৪০ কোটি ডলার। তার আগের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে ১ হাজার ১৬২ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়। তার মধ্যে কাঁচামাল আমদানি ছিল ৩৩৯ কোটি ডলারের। ওই প্রান্তিকে প্রকৃত রপ্তানি ছিল ৮২২ কোটি ডলারের।
জানতে চাইলে নিট পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, নিট পোশাকের রপ্তানি বাড়ছে। নিট পোশাকে দেশীয় মূল্য সংযোজন বেশি। অন্যদিকে ওভেন পোশাকের রপ্তানি কমেছে। সে জন্য বিদেশ থেকে কাঁচামাল আমদানি কমে গেছে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় বাজারের সুতার দাম কাছাকাছি। সে কারণে দেশীয় সুতা ব্যবহার বেশি হয়েছে। মোদ্দাকথা, ডলার–সংকটের কারণে বিদেশ থেকে কাঁচামাল আমদানি কমেছে। তৈরি পোশাক রপ্তানিতে নিট পোশাকের হিস্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রকৃত রপ্তানি বেড়েছে। এটি দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে ইতিবাচক।