মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান ‘নগদ’ এর লাইসেন্স অন্তর্বর্তীকালীন অনুমোদনের জন্য আগামী ডিসেম্বর (২০২১) পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে আবেদন করেছে ডাক বিভাগ।এর আগে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস নগদের চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য সাড়ে তিন মাসের অন্তর্বর্তীকালীন অনুমোদন দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক, যা চলতি মাসের ৩০ জুন শেষ হচ্ছে। কিন্তু করোনায় অফিস কার্যক্রম বন্ধ থাকায় এবং কিছু আইন ও নিয়মনীতি সংশোধনের জন্য অতিরিক্ত সময় চেয়ে সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে আবেদন করা হয়েছে।
অবশ্য চলতি মাসের শুরুর দিকে বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে এ সংক্রান্ত একটি বৈঠক করে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ। ডাক বিভাগের সচিব মো. আফজাল হোসেনের সভাপতিত্বে বৈঠকে সময় বাড়ানোর জন্য আবেদন করার সিদ্ধান্ত হয়।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, করোনায় লকডাউনের কারণে সাধারণ ছুটি থাকা এবং সে কারণে বৈঠক করতে না পারায় সাবসিডিয়ারি কোম্পানি গঠনের কার্যক্রম শেষ করতে বাড়তি সময় লেগেছে। ফলে ডাক বিভাগ বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশিত কিছু বিষয় সম্পন্ন করতে পারেনি। বিষয়গুলো সম্পন্ন করতে বেশ কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনেরও প্রয়োজন রয়েছে। লকডাউন থাকায় মন্ত্রণালয়গুলোতে প্রয়োজনীয় কাজ সম্পন্ন করতে পারেনি ডাক বিভাগ, যার ফলে নির্দিষ্ট সময়ে সব কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি।
এরই মধ্যে সাবসিডিয়ারি কোম্পানি গঠনের জন্য মেমোরেন্ডাম অব অ্যাসোসিয়েশন (এওএ), আর্টিকেল অব অ্যাসোসিয়েশন (এওএ) এবং ভেন্ডার অ্যাগ্রিমেন্টের খসড়া তৈরি হলেও সেটি সরকারের চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
ডাক বিভাগের সাবসিডিয়ারি কোম্পানি হিসেবে নগদকে পরিচালনার জন্য সরকারের দিক থেকে প্রক্রিয়াগত কার্যক্রম চললেও এক্ষেত্রে আইন সংশোধনসহ প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের মতো দীর্ঘমেয়াদি বিষয় জড়িত। আর সে কারণেই নগদের সেবা পরিচালনা সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনাপত্তির মেয়াদ ছয় মাস বাড়াতে সম্প্রতি আবেদন করা হয়েছে।
ডাক অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. সিরাজ উদ্দিনের সই করা আবেদন বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা পড়েছে বলে নিশ্চিত করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘নগদকে চলতি মাসের ৩০ তারিখ পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছিল। আবারও নগদ আবেদন করেছে। তাদের আবেদন পর্যালোচনা করা হবে।’
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ২৬ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নগদের উদ্বোধন করেন। বর্তমানে এমএফএস অপারেটরটি দৈনিক ৬৫০ কোটি টাকার বেশি লেনদেন করছে। এছাড়া করোনা মহামারির মতো পরিস্থিতিতে সরকারি সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির ভাতা এবং অন্যান্য সরকারি সহায়তা বিতরণ করছে নগদ।