বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং ই-কমার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব) এর যৌথ আয়োজনে সদ্য প্রকাশিত “ডিজিটাল কমার্স পরিচালনা নির্দেশিকা ২০২১” বিষয়ে এক সাংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। জুম অনলাইনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
বাণিজ্য মন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে বলেন, সদ্যঘোষিত ডিজিটাল কমার্স পরিচালনা নির্দেশিকা বিক্রেতা ও ভোক্তা উভয়ের স্বার্থ সংরক্ষন করবে। এই নির্দেশিকা প্রতিপালনের মাধ্যমে ই-কমার্স খাতে শৃংখলা প্রতিষ্ঠিত হবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সরকারী এবং বেসরকারী সংশ্লিষ্ঠ প্রতিষ্ঠানের মতামত নিয়ে একাধিকবার আলোচনার মাধ্যমে এটি চূড়ান্ত করেছে। তিনি বলেন, এটা একটা আইনগত প্রক্রিয়ার সূচনা। প্রয়োজনে সকলের মতামত নিয়ে ভবিষ্যতে এটি সংশোধন করা হবে। মন্ত্রী ডিজিটাল কমার্স পরিচালনা নির্দেশিকার গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো এ সময় তুলে ধরেন।
গত ৪ জুলাই বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডব্লিওটিও সেল থেকে ডিজিটাল কমার্স পরিচালনা নির্দেশিকা ২০২১ গেজেট আকারে প্রকাশ করেছে। ডিজিটাল কমার্স পলিসি ২০১৮ এর ৩.৩.৬ বিধির নির্দেশনা অনুসারে এটি প্রনয়ন করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, দ্রুততার সাথে এই নীতিমালা চূড়ান্তকরণকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। সমস্যার সমাধানের একটা গাইডলাইন এই নীতিমালা। এছাড়া প্রচলিত আইন ও সংশ্লিষ্ঠ সকল পক্ষের মতামত সমন্বয় করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ঠ প্রতিষ্ঠানগুলো নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করলে এই নির্দেশিকা বাস্তবায়ন সহজ হবে।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন পরিষদ এর মহাপরিচালক বাবলু কুমার সাহা সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ভোক্তাদের অধিকার আদায়ের জন্য কাজ করছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন পরিষদ। ইতোমধ্যে আমরা ই-ক্যাবের সাথে যৌথসভা করেছি। এই নির্দেশিকা বাস্তবায়ন এর ক্ষেত্রে সকলকে একসাথে কাজ করতে হবে। পারষ্পরিক সহযোগিতার এর মাধ্যমে এটি প্রতিপালন করলে এর সুফল সকলের কাছে পৌঁছে দেয়া সম্ভব।
বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন এর চেয়ারম্যান মো. মফিজুল ইসলাম বলেন, ইতোপূর্বে বিভিন্ন অস্বাভাবিক অফারের ক্ষেত্রেও আমরা একটা নির্দেশনা দিয়েছি। ডিজিটাল কমার্স সেক্টরকে এই নির্দেশনা মেনে চলার জন্য আহবান জানাব। আমরা আশা করি প্রয়োজনীয় তথ্য উপাত্ত দিয়ে এসোসিয়েশন এবং ডিজিটাল কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো কমিশনকে প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে সহযোগিতা করবে।
ই-ক্যাবের সভাপতি শমী কায়সার বলেন বলেন, আমরা ই-ক্যাব থেকে দীর্ঘদিন ধরে বিষয়টি চূড়ান্ত করার জন্য ই-ক্যাবের সদস্যদের মতামত সংকলিত করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পেশ করেছি। এখানে যাতে ক্রেতাদের অধিকার রক্ষা পায় এবং বিক্রেতাদের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয় দুটো বিষয় রাখার চেষ্টা করেছি। ই-ক্যাব সভাপতি এই নির্দেশিকা দ্রুত চূড়ান্ত করার জন্য সংশ্লিষ্ঠ সকলকে ধন্যবাদ জানান। বাস্তবতার আলোকে পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় সংশোধণের জন্য ই-ক্যাব সরকারের সাথে কাজ করবে বলেও জানান তিনি।
ই-ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াহেদ তমাল বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রিতে ক্রেতাদের উৎকন্ঠা এবং সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনের কারণে এই নির্দেশিকার প্রাসঙ্গিকতা সামনে চলে এসেছে। এই নীতিমালার প্রস্তাব ই-ক্যাব ৩ বছর আগে প্রস্তাব করলেও বিগত ১ বছর ধরে এটি প্রণয়নের জন্য ই-ক্যাব থেকে পর্যায়ক্রমে সরকারী সংশ্লিষ্ঠ দপ্তরকে অনুরোধ এবং সহযোগিতা করে আসছে। তারই ফল এই নীতিমালা। এর ফলে বিদ্যমান সমস্যা অনেকাংশে কমে যাবে।
আলোচনায় অংশ নেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক, ডব্লিউটিও সেল ও অতিরিক্ত সচিব হাফিজুর রহমান, বেসিস এর প্রেসিডেন্ট সৈয়দ আলমাস কবীর।
ই-ক্যাবের সহ-সভাপতি সাহাব উদ্দিন শিপন, অর্থ সম্পাদক মোহাম্মদ আব্দুল হক অনু, যুগ্ন সম্পাদক নাসিমা আকতার নিশা, ই-ক্যাবের পরিচালক সাইদ রহমান, পরিচালক জিয়া আশরাফ, পরিচালক আসিফ আহনাফ, জেনারেল ম্যানেজার জাহাঙ্গীর আলম শোভন, ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মাহমুদ উর রহমান সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।