দেশের ই-কমার্স সেক্টরের সাম্প্রতিক সময়ের ঘটনা প্রবাহের আলোকে সৃষ্ট সমস্যা ও তার সমাধানের মাধ্যমে ক্রেতার আস্থা ফিরিয়ে আনতে ও কাংখিত প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে উদ্যোক্তাদের নিয়ে সরকারের সাথে একযোগে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে ই-কমার্স ব্যবসায়ীদের সংগঠন ই-কমার্স এ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (ই-ক্যাব)।
সোমবার (৮ নভেম্বর) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁ হোটেলে অনুষ্ঠিত এক মিট দ্যা প্রেস অনুষ্ঠানে ই-ক্যাবের কার্যনির্বাহী পরিষদ সদস্যদের উপস্থিতি এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ২০১৪ সাল থেকে ই-কমার্সখাতের উন্নয়নে সংগঠনটি অনবরত যেসব উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, সরকারের সাথে যেসব নীতিগত সিদ্ধান্তে ভূমিকা রেখেছে এবং এই খাতের যেসব সমস্যার সমাধান করেছে তা তুলে ধরা হয় উক্ত অনুষ্ঠানে।
এসময় স্বাগত বক্তব্যে ই-ক্যাবের সহ-সভাপতি সাহাব উদ্দিন শিপন বলেন, সূচনালগ্ন থেকে এই খাতের নানা সমস্যা ও সীমাবদ্ধতার ভেতর দিয়ে উদ্যোক্তারা কাজ করে আসছে। যোগাযোগ ও ডিজিটাল অবকাঠামোতে আমাদের যে পরিমাণ উন্নতি হয়েছে তারচেয়ে বেশী প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ই-কমার্স খাতে। এর কারণ মূলত সঠিক সেবা দেয়া। করেনাকালীন সময়ে সেবার মাধ্যমে যে আস্থা ও বিশ্বাস এখাতের উদ্যোক্তা ও কর্মীরা তৈরী করেছে সেটা কোনোভাবে নষ্ট হতে দিতে চায়না ই-ক্যাব।
তিনি বলেন, এই মুহুর্তে নীতিমালা মেনে ব্যবসা পরিচালনা করে এবং ক্রেতাদের সঠিক ও মানসম্পন্ন সেবা প্রদানের মাধ্যমে ক্রমাগত প্রবৃদ্ধিতে আমরা ফিরে আসতে পারব।
তিনি আরো বলেন, ঝুকিপূর্ণ ব্যবসা পদ্ধতির কারণে শুধু যে ক্রেতা এবং মার্চেন্টরা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তা নয়। বরং নেতিবাচক বার্তাও ছড়িয়ে পড়েছে এতে করে এই খাতে যে বিদেশী বিনিয়োগ আসার সম্ভাবনা তৈরী হয়েছে তা এখন অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। যেসব প্রতিষ্ঠান সঠিকভাবে ব্যবসা করছে যাদের সফলতার গল্প আছে সেগুলোও তুলে আনা প্রয়োজন।
ই-ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াহেদ তমাল বলেন, এখনো এই খাত লাভের মুখ দেখেনি। তারপরও একদিকে যেমন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করছে অন্যদিকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গত দেড়বছর কর্মীরা সেবা দিয়ে গেছে। ই-বাণিজ্যের মাধ্যমে ডিজিটাল অর্থনীতি ও দেশের সার্বিক অর্থনীতিতে যে অবদান রেখেছে ই-কমার্সখাত তা অনস্বীকার্য। তিনি বলেন এই খাতের প্রতি ক্রেতার আস্থা ও ক্রমবর্ধমান প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে আমরা সকলকে নিয়ে কাজ করতে চাই। এ ব্যাপারে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ এর উল্লেখ করে জনাব তমাল বলেন, সদস্যদের সাথে নিয়ে আমরা সরকারের সাথে কাজ করছি। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে ই-কমার্স আবার ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে।
ই-ক্যাবের পরিচালক আশীষ চক্রবর্তী বলেন, এই সময় ক্রেতা এবং উদ্যোক্তা সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। আমরা জানি ট্রেড এসোসিয়েশন কোনো প্রতিষ্ঠানের আর্থিক হিসাব দেখতে বা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। এক্ষেত্রে যেসব সমস্যা হয়েছে সেগুলো সমাধানের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ও আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা কাজ করছে। ই-ক্যাব থেকেও অনবরত দাবী ও চিঠি দেয়ার মাধ্যমে বিষয়গুলো কতৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করে সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। তাই সকলের উচিৎ পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের জন্য কাজ করা।
ই-ক্যাবের পরিচালক জিয়া আশরাফ বলেন, ক্রেতারা তাদের প্রয়োজনে সেবা নেয়ার জন্যই ই-কমার্সের উপর ভরসা করেছেন। সঠিক সেবা দেয়ার মাধ্যমে সে ভরসা অব্যাহত থাকবে। বর্তমানে ই-কমার্স উদ্যোক্তারা সেবা দানে যেমন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ তেমনি সংকট উত্তরণে সবাই একতাবদ্ধ। তাই সঠিক সেবার মাধ্যমে এই সংকট কাটিয়ে উঠতে পারবে। এজন্য সরকারের সহযোগিতা খুব গুরুত্বপূর্ণ এছাড়া ক্রেতাদের উচিৎ যেসব প্রতিষ্ঠান সঠিক সেবা দেয় তাদের কাছ থেকে সেবা গ্রহণের মাধ্যমে পাশে থাকা। তাহলে আমরা সকলে মিলে আবার প্রবৃদ্ধির ধারায় ফিরে আসবো। বিক্রোতারা যেমন নিজেদের স্বার্থে সঠিক সেবা দিবে তেমনি ক্রেতারাও নিজেদের প্রয়োজনে ই-কমার্সের সেবা গ্রহণ করবে।
একটি মন্তব্য
ই ক্যাব তো ই কমার্স ধংস কারী প্রতিষ্ঠান।