
Google Maps এ বড় ধরনের একটি পরিবর্তন এসেছে, যেখানে ‘Gulf of Mexico’-এর নাম বদলে ‘গালফ অফ আমেরিকা’ রাখা হয়েছে। এই পরিবর্তন অনেককে অবাক করেছে, কারণ শত শত বছর ধরে এই সাগরটি ‘গালফ অফ মেক্সিকো’ নামেই পরিচিত ছিল।এই নাম পরিবর্তনের পেছনে মূল কারণ হলো যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি নির্বাহী আদেশ। তিনি যখন ২০১৭ সালে ক্ষমতায় আসেন, তখন শপথ গ্রহণের দিনই তিনি ঘোষণা দেন যে, ‘গালফ অফ মেক্সিকো’-এর নাম পরিবর্তন করে ‘গালফ অফ আমেরিকা’ করা হবে। ট্রাম্পের মতে, এটি আমেরিকার ইতিহাস ও গৌরবকে পুনরুদ্ধার করার একটি পদক্ষেপ। এর আগেও তিনি ওবামা প্রশাসনের একটি সিদ্ধান্ত বাতিল করেন, যেখানে আলাস্কার ‘মাউন্ট ম্যাককিনলে’-এর নাম স্থানীয় আদিবাসীদের প্রচলিত নাম ‘ডেনালি’ রাখা হয়েছিল। ট্রাম্প মনে করতেন, আমেরিকান নাম ও ইতিহাস সংরক্ষণ করা দরকার, তাই তিনি এই ধরনের পরিবর্তন আনেন।গুগল এই আদেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সোমবার থেকে গুগল ম্যাপে ‘গালফ অফ মেক্সিকো’-এর নাম বদলে ‘গালফ অফ আমেরিকা’ করে দেয়। এখন যুক্তরাষ্ট্রে থাকা গুগল ম্যাপ ব্যবহারকারীরা নতুন নামটিই দেখতে পাবেন। তবে আন্তর্জাতিক ব্যবহারকারীদের জন্য দুটো নামই দেখাবে একদিকে ‘গালফ অফ মেক্সিকো’, অন্যদিকে ‘গালফ অফ আমেরিকা’। অন্যদিকে, মেক্সিকোতে থাকা ব্যবহারকারীরা আগের মতোই কেবল ‘গালফ অফ মেক্সিকো’ নামটাই দেখতে পাবেন।এই সিদ্ধান্তের ফলে মেক্সিকো অসন্তুষ্ট হয়েছে এবং দেশটির প্রেসিডেন্ট ক্লাউডিয়া শেইনবাউম ঘোষণা করেছেন যে, তিনি গুগলের কাছে ব্যাখ্যা চাইবেন। তার মতে, এই নাম পরিবর্তন মেক্সিকোর ইতিহাস ও সার্বভৌমত্বের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। যদিও গুগল জানিয়েছে যে, তারা নির্দিষ্ট কোনো দেশের পক্ষ নিয়ে এই পরিবর্তন করেনি। সাধারণত, গুগল ম্যাপস ব্যবহারকারীর অবস্থান, মোবাইলের সিম কার্ড ও নেটওয়ার্ক অনুযায়ী নাম পরিবর্তন করে দেখায়। তাই বিভিন্ন দেশে থাকা মানুষজন আলাদা নাম দেখতে পাবে।তবে গুগল যখন এই পরিবর্তন করেছে, তখন আরেক বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান অ্যাপল এখনো এই পরিবর্তন আনেনি। অ্যাপল ম্যাপে এখনো ‘গালফ অফ মেক্সিকো’ নামটিই দেখা যাচ্ছে, এমনকি যদি কেউ ‘গালফ অফ আমেরিকা’ নামে কিছু খোঁজার চেষ্টা করে, তাতেও কোনো ফলাফল আসছে না।এখানে আরও একটি বিষয় লক্ষণীয়, তা হলো গুগল ও অ্যাপল দুই প্রতিষ্ঠানই ট্রাম্পের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিল এবং তারা তার উদ্বোধনী তহবিলে বড় অঙ্কের অর্থ অনুদান দেয়। গুগলের সিইও সুন্দর পিচাই ও অ্যাপলের সিইও টিম কুক দুজনেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং অ্যাপল ও গুগল উভয়ই ট্রাম্পের তহবিলে ১০ লাখ ডলার করে দান করে।এই পরিবর্তন শুধু একটি মানচিত্রের নাম বদলানোর বিষয় নয়, বরং এটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের অংশ, যা আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও জাতীয় গর্বের সঙ্গে জড়িত। মেক্সিকোর জনগণ ও সরকার এই পরিবর্তন মেনে নেবে কি না, সেটি এখনো নিশ্চিত নয়, তবে এটি স্পষ্ট যে, নাম পরিবর্তন নিয়ে বিতর্ক দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে।