জাতিসংঘের ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন (আইটিইউ) কে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর জন্য একটি অত্যন্ত শক্তিশালী আন্তর্জাতিক আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) গভর্নেন্স এজেন্সি প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। এই এজেন্সির অধীনে সকল সদস্য রাষ্ট্র এবং অংশীদারদের অংশগ্রহণে এই সংস্থার অধীনে এমন একটি উপদেষ্টা বোর্ড থাকা উচিত বলে মত দিয়েছেন তিনি। পলকের প্রস্তাব এই বোর্ডে বিজ্ঞানী, প্রযুক্তিবিদ, প্রকৌশলী এবং নাগরিক প্রতিনিধিরা অন্তর্ভুক্ত থাকবেন। পাশপাশি তিনি প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন, এখন থেকেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে কৃত্রিমবুদ্ধিমত্তা (এআই) বিষয়ে পাঠদান শুরু করা হবে অনতিবিলম্বে।
সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় জাতিসংঘের ওয়ার্ল্ড সামিট অন ইনফরমেশন সোসাইটির (ডবিলউএসআইএস)+২০ সম্মেলন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত সুশাসনের জন্য এআই শীর্ষক টেবিল আলোচনায় এই প্রস্তাব দেন বাংলাদেশের আইসিটি ও টেলিকম প্রতিমন্ত্রী।
পলক বলেন, ‘উই’ মানে সরকার, বেসরকারি খাত, এনজিও, আইএনজিও এবং শিল্প, বিজ্ঞানী, একাডেমিয়া একসাথে এবং সম্মেলিতভাবে কীভাবে এআই গভর্নেন্স নেটওয়ার্কটির সফল বাস্তবায়ন করা যায় তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছি। এছাড়া আমরা জাতিসংঘ এবং বিভিন্ন দেশ থেকে এআই আইন, নির্দেশিকা, নীতি প্রবর্তনের সুযোগ তৈরি করতে চাই।
পরবর্তীতে এআই সরকার বাস্তবায়নের ইনসাইট অনুসন্ধান বিষয়ক পেনেল আলোচনায় প্রতিমন্ত্রী পলক বলেছেন, এআই মানুষের ক্ষমতায়ন এবং উদ্ভাবনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তবুও এর ঝুঁকি মোকাবেলায় আমাদের অবশ্যই সতর্ক এবং সক্রিয় থাকতে হবে। সরকার, শিল্প এবং সমাজ একসাথে কাজ করার মাধ্যমে, আমরা এআই এর সম্ভাব্য হুমকির বিরুদ্ধে নিজেদের নিরাপদ করার পাশাপাশি বৃহত্তর স্বার্থে কল্যাণকর কাজের জন্য এর শক্তিকে কাজে লাগাতে পারি।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ যার উচ্চাকাঙ্ক্ষা ও প্রত্যাশা রয়েছে এআই নিয়ে। আমাদের সবচেয়ে সময়োপযোগী উদ্যোগ হল “G-Brain” অর্থাৎ গভর্নমেন্ট ব্রেইন এর উন্নয়ন, যেটি এআই নিয়ন্ত্রিত, যার লক্ষ্য আমাদের সরকারি সেবাগুলো আরও কার্যকরভাবে সরবরাহ করার সক্ষমতা অর্জন এবং উন্নত করা। এআই এর অগ্রগতি গ্রহণ করার সাথে সাথে এর অপব্যবহার থেকে রক্ষা করার জন্য আমাদের অবশ্যই শক্তিশালী প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। এআই এর ইতিবাচক ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য নৈতিক নির্দেশিকা এবং নিয়ন্ত্রক কাঠামো প্রতিষ্ঠা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রবার্ট এফ ট্র্যারাগারের সঞ্চালনায় টেবিল আলোচনায় আরো অংশ নেন নামিবিয়ার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রী মিসেস ইম্মা ইনামুতিলা থিওফেলাস এবং কলম্বিয়ার তথ্য ও যোগাযোগ মন্ত্রী মারিসিও লিজাক্যানো।